স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
প্রকাশিত : ১০:০৮ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১০:০৮ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৮ সোমবার
রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ বলেছেন, ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তির সব প্রকার ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা প্রতিহত করতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, তারা দেশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও উন্নয়নের শত্রু। তিনি বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে। সকলের মাঝে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে হবে।
রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া পযর্ন্ত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই স্বাধীনতা যুদ্ধে কার কি অবদান রয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে হবে। খন্ডিত ইতিহাস কোন জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে না। বিগত দিনে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক মিথ্যাচার ও তথ্য বিকৃতি হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ১৯৭১ পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস শিক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করেছে। তারা সবকিছু জেনে শুনেই করেছে। তারা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভয় পায় বলেই এ সব করছে। বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের যন্ত্রনা ভুলতে পারেনি। ফলে এই অশুভ শক্তি যখনই সুযোগ পায়, তখনি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা তাঁর ভাষণে দেশের স্বাধীনতার ও মুক্তিযদ্ধের রূপরেখা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেন। ভাষণে তাঁর অবর্তমানে ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কেও তিনি পরিষ্কার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে ৭ মার্চের ভাষণ হচ্ছে বাঙালীর মুক্তি সনদ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এবং স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় দিন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জয়দেবপুরে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। তিনি ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে শহীদ নেয়ামত, মনু খলিফা, হরমতসহ সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি আরো বলেন, এই প্রতিরোধ সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতিকে বেগবান করেছিল এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে জনগণকে উৎসাহিত করেছিল। তিনি সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে অধিক গুরুত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের একটি সুখি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, মো. জাহিদ আহ্সান রাসেল এমপি, গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান, নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ্ খান এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গির আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান এম হুমায়ন কবির। সূত্র: বাসস
আর