উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বড় প্রস্তুতির প্রয়োজন
রিজাউল করিম
প্রকাশিত : ০৭:০০ পিএম, ২০ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:০৯ এএম, ২১ মার্চ ২০১৮ বুধবার
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতিপত্র দিয়েছে। ২০১৫ সালের শুরু থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিন বছর নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার সিডিপি এ সংক্রান্ত চিঠি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের কাছে হস্তান্তর করেছে। চিঠিতে নিশ্চিত করা হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার তিনটি সূচকের মধ্যে সব কটিই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে তিন বছর অন্তর আরও দুটি রিভিউ হবে বাংলাদেশের জন্য। যার একটি হবে ২০২১ সালে। অপরটি হবে ২০২৪ সালে। এ সময়ে বাংলাদেশ সূচকগুলিতে সক্ষমতা দেখাতে পারলে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করা হবে।
যে তিনটি সূচকে বাংলাদেশ নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে সেগুলো হলো-পার ক্যাপিটা বা ন্যাশনাল ইনকাম (মাথাপিছু আয়)। দ্বিতীয়টি হলো মানবসম্পদ সূচক। তৃতীয়টি হচ্ছে জিডিপির প্রবৃদ্ধি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগামী ছয় বছর বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণে রাখবে জাতিসংঘ। সেই পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ উল্লেখিত সূচকগুলোতে সক্ষমতা দেখাতে হবে। সেজন্য কিছু চ্যালেঞ্জও অপেক্ষা করছে। কারণ এতোদিন স্বল্পোন্নত দেশ থাকায় বেশ কিছু সুবিধা পেয়ে আসছিল বাংলাদেশ। সেগুলো হারাতে হবে। সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হবে সফলতার সঙ্গে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যায় এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায় তবে তিনটি সূচকই ধরে রাখতে পারবে বাংলাদেশ। সেজন্য উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যদি বড় ধরণের কোনো বিপর্যয় না আসে তবে বাংলাদেশ আগামী ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাবে। এটার জন্য আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটি আসবে সেটি হচ্ছে আগামী ছয় বছরে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পনের যে ধাপগুলো আছে তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করা। সেই সঙ্গে বর্তমানের সূচকগুলো ধরে রাখা। আগামীতে নতুন যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলোও দ্রুত অতিক্রম করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
একই কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হানও। তিনি মনে করেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি ইতিবাচক খবর। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে। আরও বেশি হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ সুগম হবে। তিনি বলেন, উত্তরণের সব পর্যায়েই কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। এগুলো মোকাবেলার প্রস্ততি নিতে হবে এখন থেকেই।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়া দেশগুলো থেকে শিক্ষা: পূর্ববর্তী এলডিসিগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে উত্তরণের আগে ও পরের পর্যায়ের ভালো চর্চাগুলো বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণের আগে বতসোয়ানা রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ৫০ শতাংশে উন্নীত করে। কেপ ভার্দে ১৯৮০ থেকে ২০১০ সময়কালে জাতীয় পরিকল্পনা ও রাজস্ব আহরণে ব্যাপক উন্নতি করে। দেশটি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য সম্পদ বিনিয়োগ করে। মালদ্বীপ বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সমর্থ হয়। বতসোয়ানা উন্নয়ন সহযোগিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার অনুযায়ী বৈদেশিক সহায়তার কার্যকর ব্যবহার করে। দেশটি সুশাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং প্রাজ্ঞ নীতির মাধ্যমে জ্বালানি সম্পদকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগায়। মালদ্বীপ সেবা খাত বিশেষত পর্যটন খাতের দিকে ঝুঁকে অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনে। সামোয়া কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং সেবা খাতে উচ্চমূল্য সংযোজনে যেতে সমর্থ হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশকে এসব দেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। প্রথমত, সুশাসন নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতি করতে হবে। বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। উচ্চমূল্য সংযোজন হয় এমন শিল্পের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে বৈদেশিক ঋণের ব্যবহার করতে হবে। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ, শিল্পখাত, শ্রমঘন, উৎপাদনশীল, প্রতিযোগিতা সক্ষম পণ্য এবং রফতানি বাজার এগুলোকে যদি আমরা একসূত্রে গাঁথতে পারি, তাহলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীলে আমাদের উত্তোরণের রাস্তাটা অনেক বেশি মসৃন হবে।
এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণের পর একটা মসৃণ রূপান্তরের জন্য বাংলাদেশকে বেশ কিছু দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাজেট ঘাটতি ও চলতি হিসাবে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বতসোয়ানার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। দেশটি সাফল্যের সঙ্গে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত বজায় রাখতে সমর্থ হয়। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সক্রিয় আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রেও বতসোয়ানার উদাহরণ প্রণিধানযোগ্য। সার্বিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বতসোয়ানা তার বৈদেশিক ঋণ জাতীয় আয়ের ১৫ থেকে ১৭ শতাংশে নামিয়ে আনে। বিকল্প অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা ও নমনীয় ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যেমন, উত্তরণের পর সামোয়া সরকার ননি জুস ও অন্যান্য কৃষিপণ্যে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীনে শূন্য শুল্কতে রফতানি করতে সমর্থ হয়। কেপ ভার্দে ২০০৬ সালে রূপান্তর সহায়তা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করে এবং বাড়তি দু`বছর ইউরোপীয় বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে সমর্থ হয়। মালদ্বীপ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ইআইএফ অর্থায়ন কাঠামো থেকে বাড়তি দু`বছর সহায়তা পায়। বাংলাদেশকে রেগুলেটরি কাঠামো শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের প্রস্তুতি: স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের সিঁড়িতে ওঠার পর লাভ-ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছে সরকার। উন্নয়নশীল দেশের ঘোষণা এলে বাংলাদেশ কোথায় কোথায় সুযোগ-সুবিধা হারাবে, আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কত হতে পারে, এসব বিষয় জানতে গবেষণার কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। ১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে গবেষণাটি পরিচালনার জন্য। অন্যদিকে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে (পিআরআই) আলাদা একটি গবেষণার দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে সরকার। এর পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) মাধ্যমে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত যেসব সুবিধা স্বল্পোন্নত দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশ এখন পেয়ে থাকে, উন্নয়নশীল হলে তাতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে সেটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে যে কম চাঁদা দিতে হয়, উন্নয়নশীল দেশ হলে চাঁদার পরিমাণ কত বাড়বে, সেটি বিশ্লেষণ করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। শিল্পনীতি নিয়ে কাজ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা থেকে শুরু করে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ।
জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, জাতিসংঘের একটি জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে ওঠার যোগ্যতাপত্র অর্জন করেছে। এখানে কোনো লবিং হয়নি। ভোটাভুটি হয়নি। বাংলাদেশকে আর কেউ দারিদ্র্যপ্রবণ দেশ বলবে না। এই অর্জন গৌরবের। অহংকারের। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হলে বাংলাদেশ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা হারাবে, বিভিন্ন মহল থেকে এমন কথা বলা হচ্ছে। বিষয়গুলো সরকারও জানে। কিন্তু কারো কাছে কোনো তথ্য নেই, আসলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত হবে। সে জন্য আমরা একটি বিস্তারিত গবেষণার কাজে হাত দিয়েছি। কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ হবে। তাছাড়া জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিসি) বাস্তবায়নের জন্য সরকার যে কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে, সেখানে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। ফলে সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতিই রয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর বলেন, উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার পর বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি নিয়ে একটি গবেষণা করতে সরকারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, সরকারের হাতে এখনো প্রায় এক দশক সময় থাকলেও প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ অন্যান্য দেশে বাজার সুবিধা হারানোর পর বিকল্প কী সুবিধা তৈরি করা যেতে পারে, সেজন্য এখন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। জিএসপি হারালে জিএসপি প্লাস কিভাবে পাওয়া যেতে পারে, সে কৌশল এখন থেকে নিতে হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা খুবই কম। সেটি বাড়াতে এখন থেকেই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে সেসব বিষয়ে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদেরা। অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, উত্তরণের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের সামনে। মাথাপিছু আয় যদি ভারত, চীন ও ভিয়েতনাম বলি তাদের তুলনায় আমাদের মাথাপিছু আয় কম আছে। এ ক্ষেত্রে ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক বছরে যে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসবে তা অনেকটা অবাস্তব। কারণ আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হয়নি।
আর একটা চ্যালেঞ্জ হলো দারিদ্র বিমোচন এবং দারিদ্র দূরীকরণ। এখানেও আমাদের বড় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে ঠিক-ই। কিন্তু বার্ষিক দারিদ্র হ্রাসের হার কমে যাচ্ছে। গত ২০০২ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত প্রত্যেক বছর দারিদ্র বিমোচনের হার ১ দশমিক ৮ শতাংশ ছিল। পরবর্তী ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত তা ১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসছিল। ২০১০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এটা আবার ১ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসছিল। এখনও আমাদের প্রায় ৪ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে। দারিদ্র বিমোচনের এ হার আরো বাড়াতে হবে। এর জন্য আমাদের বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
আর একটা হলো সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি। এক্ষেত্রে ২০০৮ ও ২০০৯ সালে বাজেট ও জাতীয় উৎপাদনের আনুপাতিকহার হিসেবে এ ক্ষেত্রে বরাদ্দ ধীরে ধীরে কমে গেছে। যদিও টাকার অঙ্ক বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তাই আমি মনে করি সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ আরো বাড়ানো উচিত। এর সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মনুষগুলোর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। কর্মমুখী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত হওয়ার কারণে কিছু সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছিল। উত্তরণের ফলে ওইসব সুবিধা হারাতে হবে। এজন্য বেশ কিছু প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করতে হবে। আমাদের স্বক্ষমতা বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দুইভাবে এগোতে হবে। একটা হচ্ছে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কীভাবে বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের প্রবেশাধিকার ধরে রাখতে পারি, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া। দ্বিতীয়ত : ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাস পাওয়া।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইকোনমিস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে বাংলাদেশের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০ থেকে ২৫ মার্চ রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত ঐতিহাসিক এই অর্জনকে উৎযাপন করা হবে। জাতিসংঘের সিডিপি থেকে প্রতিনিধি এসে ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতাপত্র তুলে দেবেন। এসব অর্জন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হবে। এতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপেীয় ইউনিয়নের `এভরিথিং বাট আর্মস` উদ্যোগের আওতায় পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার, পরিবেশ ও সুশাসন বিষয়ে ইইউর নিয়ম-কানুনের শর্ত পূরণ করলে জিএসপি প্লাস নামে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাও পাবে।
আরকে// এআর