দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন
সীমান্তে বাঙ্কার নির্মাণ করছে মিয়ানমার
প্রকাশিত : ০৯:৩০ এএম, ২১ মার্চ ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৯:৩২ এএম, ২১ মার্চ ২০১৮ বুধবার
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। বরং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ঠেকাতে দেশটি এবার বাংলাদেশ সীমান্তে কাটাতারের বেড়া, দেওয়াল নির্মাণ ও মাটির নিচে বাঙ্কার বানাচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
গতকাল মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিটের জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তার অজুহাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে মিয়ানমার। কোথাও কোথাও কংক্রিটের দেওয়াল নির্মাণের মধ্য দিয়ে সুরক্ষা জোরদারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও বাঙ্কার, কোথাও আবার স্থাপিত হচ্ছে সীমান্ত নিরাপত্তা চৌকি।
এদিকে নতুন করে সীমান্তে নিরপত্তা জোরদারের নামে মিয়ানমারের আগ্রাসনের ফলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সীমান্তে বাঙ্কার ও কাটাতারের বেড়া নির্মাণের ফলে, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে মিয়ানমার, আর তা হলো-দেশটিতে ফিরলেই রোহিঙ্গাদের আবারও নির্যাতনের মুখে পড়তে হবে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মঙ্গলবার এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানায়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ১৭০ মাইল সীমান্ত এলাকার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে। আর এতে রোহিঙ্গারা বলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এসব তৎপরতার ফলে তারা দেশটিতে ফেরত যেতে চান না।
রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে বুলডোজার চালিয়ে আলামত নষ্ট, বিপুল সামরিকায়ন, উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকা, প্রত্যাবাসন নিয়ে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর হুমকির ধারাবাহিকতায় রাখাইনে বৌদ্ধদের মডেল গ্রাম গড়ে উঠছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এবার সীমান্তে নতুন করে সুরক্ষার পদক্ষেপের কথা জানা গেল।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বরাতে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমার সীমান্তে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। আর এসব তৎপরতাকে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে দেশটি থেকে উৎখাতের অংশ হিসেবে দেখছেন তারা। এদিকে ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ওয়্যার কলেজেরে অধ্যাপক জাকারিয়া আবুজা বলেন, মিয়ানমার মনে করছে, সিংহভাগ রোহিঙ্গাকে দেশটি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তারা সফল। এ ছাড়া তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দোযকে পরিণত করে, প্রত্যাবাসন বন্ধ করতে পেরে, তারা আরও উৎফুল্ল।
এদিকে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অংসান সু চির সরকার বলছে, তারা কেবল সেইসব রোহিঙ্গাকেই দেশটিতে ফেরত নিবে,যারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলে প্রমাণ করতে পারবে। তবে প্রতিবেদেনে উল্লেখ করা হয়, একদিকে বলছে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিবে, অন্যদিকে তাদের ফেরতের সব পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। এদিকে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিজেদের স্টাইলে আবাসন তৈরি করছে। ওইসব এলাকায় এখন থেকে সেনাবাহিনীর সীমান্ত চৌকি থাকবে বলেও বলা হচ্ছে। এজন্য সেনাবাহিনীর জন্য ওইসব এলাকায় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
এরইমধ্যে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এদিকে অংসান সু চির এক মুখপাত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পক্ষ থেকে হুমকি আসার কারণেই তারা সীমান্তে কাটাতারের বেড়াসহ বাঙ্কার নির্মাণ করছে।
সূত্র: ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল
এমজে/