ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

টক মিষ্টি ফল ‘চেরি’

প্রকাশিত : ১২:২৪ পিএম, ২৩ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০২:১৪ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার

চোখ ধাঁধানো হলকা টক মিষ্টি ফল চেরি। আকৃতি কিছুটা অরবড়ই-এর মত। দেহ সামান্য খাঁচযুক্ত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পরে হালকা হলুদ এবং সর্বশেষ গাঢ় লাল রং ধারণ করে। গাছের আকৃতি মধ্যম মানের।

চেরি হচ্ছে ‘প্রুনাস’ গণের অন্তর্ভুক্ত একটি ফল ৷ বানিজ্যিকভাবে যে চেরির জাত চাষ করা হয় তা মূলত Prunus avium (প্রুনাস অভিয়াম)। বুনো চেরি ফসলি মাঠে চাষের অযোগ্য। যদিও ব্রিটিশ দীপপুঞ্জতে Prunus avium কে বুনো চেরি বলা হয়।

চেরির অনেক জাত ‘কেরাসাস (Cerasus)’ উপপ্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এই উপপ্রজাতি উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে অভিযোজিত। তাছাড়াও দুটি প্রজাতি আমেরিকাতে, তিনটি প্রজাতি ইউরোপের দেশগুলোতে এবং বাকিগুলো এশিয়ার জন্য অভিযোজিত। চেরি অপর একটি উপপ্রজাতি হল প্যডাস (Padus)। prunus avium প্রজাতির চেরি মিষ্টি চেরি বা (বুনো চেরি) নামে পরিচিত, যা মানুষ খেয়ে থাকে। আবার Prunus cerasus প্রজাতির চেরি টক চেরি নামে পরিচিত ৷

চেরির চাষযোগ্য জাতের মধ্যে prunus avium এবং prunus cerasus অন্যতম। p.cerasus জাতের চেরির স্বাদ টক। তাই এটি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই দুটি জাতেরই উৎপত্তি ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়াতে। এদের ক্রস পলিনেশন ঘটে না। সেচকাজ, স্প্রে, অতিবৃষ্টির প্রভাব, শিলাবৃষ্টির প্রভাব চেরি উৎপাদন কমে গেছে। আর এ জন্য চেরির ক্রয়মূল্য অন্য ফলের চেয়ে বেশি। তাছাড়া সারা বিশ্বে চেরির চাহিদা অনেক। চেরি গাছের ও ফলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে ফলকে হাত দ্বারা তোলা হয় ৷

জাপানের ফল হলেও আমাদের দেশে চেরির ব্যাবহার অনেক আগে থেকে। সরাসরি খাওয়ার জন্য বা অন্য খাবারকে সুন্দর করে সাজাতে লাল টুকটুকে চেরির ব্যবহার চলছে অনেক আগে থেকেই।

দেখতে লোভনীয় আর স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় চেরির কদর অনেক। অসাধারণ পুষ্টিগুণে ভরা দর্শনধারী চেরিফল।

পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম চেরিতে আছে ৬৩ গ্রাম ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৬ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম, ফোলেট ৪ গ্রাম, ভিটামিন সি ৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৬৪০ আইইউ, ভিটামিন কে ২ গ্রাম, পটাশিয়াম ২২২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম। আজ জেনে নেব চেরির স্বাস্থ্য উপকারী কিছু গুণ সম্পর্কে।

– চেরিতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

– দেহে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ কমাতেও চেরি সাহায্য করে।

– চেরিতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর।

– বাতের ব্যথা, মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে এই ফল সাহায্য করে।

– চেরি ফল নিয়মিত খেলে রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে।

– নিয়মিত চেরি খেলে ডায়বেটিক হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

– চেরিতে থাকা মিলাটোনিন নামক উপাদান দেহের রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।

(তথ্য সূত্র : ফল পরিচিতি, এটিএম নাছিমুজ্জামান ও উইকিপিডিয়া)

এসএ/