ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

ভয়ে আমারও গলা শুকিয়ে আসছিল: বিমানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ২৩ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার

‘সেদিন ভয়ে আমারও গলা শুকিয়ে আসছিল। বিমান যখন অবতরণ না করে আকাশে ঘন্টাব্যাপী বিচরণ করছিল। তখন আমি ভাবলাম এবার হয়তো আমি নিজেই দূর্ঘটনায় পড়তে যাচ্ছি। আমার জীবন প্রদীপ এবারই বুঝি নিভে যাব’। কথাগুলো বলছিলেন দেশের খোদ বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বিমান চলাচলের অবস্থা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা বিমানের যাত্রীদের কথা স্মরণ করে বলেন, এ ক্ষতি কখনও পুষিয়ে ওঠার নয়। এ ঘটনায় আসলে কার বা কাদের গাফিলতি আছে তাও বের করা কঠিন। তবে যে কারণেই হোক এটা দূর্ঘটনা। এ ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই সবার প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, ‘বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আমি নেপাল গিয়েছিলাম। দূর্ভাগ্যক্রমে আমাদের পরিবহনকারী বিমানটিও দীর্ঘ এক ঘন্টাব্যাপী আকাশে বিচরণ করছিল। আমি বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে কয়েকবার বলার চেষ্টা করলাম ল্যান্ড না করার কারণ কি। তারা সন্তোষজনক কোন জবাব দিতে পারে না। এ সময় আমার গলা পুরো শুকিয়ে আসছিল। মনে মনে বলতে লাগলাম। আল্লাহ আমি এলাম বিমানে নিহতদের বাংলাদেশে ফেরত নিতে। এখন কী আমারই এদের মতো হবে। আমি-ই কী দূর্ঘটনায় পড়তে যাচ্ছি। জীবন কী আর বাংলাদেশে ফিরে যাবে না? এসব ভাবতে ভাবতে আমার মাথা ভার হয়ে আসতে লাগলো। আমি নিরুপায় হয়ে বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে বিমান অবতরণ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলাম। তখন জানতে পারলাম বন্দর জটের কারণে ল্যান্ড করতে পারছে না বিমান। আমি বললাম প্রয়োজনে অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তারপরও লেট হচ্ছে দেখে জানতে চাইলাম আপনাদের ফুয়েল আছে তো? এই যদি হয় বিমান চলাচলের অবস্থা। তবে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে’।

মন্ত্রীর এ বক্তব্যের সময় অনুষ্ঠানে পর্যটন মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ মনিটর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম, বিমান বাংলাদেশের সেলস পরিচালক আলী আহসান বাবুসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীর কৌতুকপূর্ণ এ বক্তব্যে উপস্থিতদের বিনোদিত করলেও গভীরভাবে এটা সবাইকে বিমান চলাচলে সতর্কতায় দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে শাহজাহান কামাল আরও বলেন, আমাদের বিমান বন্দরসহ আকাশ পথে চলাচল অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। ভবিষ্যতে যেন বিমান দূর্ঘটনার মতো এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক হতে হবে। আমি বিমানবন্দর ঠিক করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমবার ইউএস-বাংলার বিমানটি ঢাকা থেকে ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করে। ওইদিন নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ৪ ক্রু ও ৬৭ আরোহী নিয়ে বিমানটি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে অন্তত অর্ধশতাধিকের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে।

আরকে/ এমজে