যক্ষ্মার লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ
প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ২৪ মার্চ ২০১৮ শনিবার
আজ শনিবার বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘নেতৃত্ব চাই যক্ষ্মা নির্মূলে, ইতিহাস গড়ি সবাই মিলে’। জেনেনিন যক্ষ্মা কি? এর লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ।
যক্ষ্মা বা যক্ষা (Tuberculosis বা টিবি)। এটি একটি সংক্রামক রোগ। মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mycobacterium tuberculosis) নামক একটি জীবাণু এই রোগের জন্য দায়ী। ‘যক্ষ্মা’ শব্দটা বাংলা ‘রাজক্ষয়’ শব্দ থেকে এসেছে। যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীরা খুব রোগা হয়ে পড়েন। যক্ষ্মা রোগে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয় ফুসফুস। যদিও হৃৎপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, ঐচ্ছিক পেশী ও থাইরয়েড গ্রন্থি ছাড়া শরীরের প্রায় যেকোনও অঙ্গেই যক্ষ্মা রোগ হতে পারে এমনকি কিডনি, মেরুদন্ড অথবা মস্তিষ্ক পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। যক্ষায় সংক্রমিত প্রতি দশ ১০ জনের মধ্যে একজনের সক্রিয় যক্ষ্মা হতে পারে। পৃথিবীর যক্ষ্মা রোগীদের প্রায় এক তৃতীয়াংশেরও বেশী ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করে। জীবাণু শরীরে ঢুকলেই কিন্তু যক্ষ্মা হয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে যক্ষ্মা হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।
যক্ষ্মার লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ
ফুসফুসে আক্রান্ত যক্ষ্মার ক্ষেত্রে,
= সাধারনত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি
= জ্বর
= কাশির সঙ্গে কফ এবং রক্ত আসলে
= বুকে ব্যথা অথবা শ্বাস নেয়ার সময় অথবা কাশির সময় ব্যথা হওয়া
= ওজন কমে যাওয়া
= শারীরিক দুর্বলতা
= ক্ষুধামন্দা বা খাদ্যে অরুচি
= অবসাদ অনুভব করা
ফুসফুস বহির্ভূত যক্ষ্মার ক্ষেত্রে,
অন্ত্র ও খাদ্যনালীর যক্ষ্মার লক্ষণগুলো হল পেটফাঁপা, পেটব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বদহজম, পেটের মধ্যে বুটবাট শব্দ হওয়া আবার কখনও কখনও পাতলা পায়খানা, খাবারে অরুচি ইত্যাদি।
চামড়ায় যক্ষ্মা হলে
চামড়া ফুলে যায়, লাল হয়ে ওঠে, ঘা হয় এবং কালো কালো দাগ হতে পারে। ঘা এর মাঝখানে কিছুটা নিচু থাকে।
অণ্ডকোষ এবং এর আনুষঙ্গিক অঙ্গে যক্ষ্মা হলে
অ-কোষ ও এপিডিডামিস ফুলে যায়, ব্যথা হয়।
গান্ড আক্রান্ত হলে
গান্ড ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়। শরীরের বিভিন্ন গান্ডের মধ্যে থেকে সাধারণত ঘাড়ের গান্ডগুলোতেই এই যক্ষ্মা বেশি হতে পারে।
কিডনি আক্রান্ত হলে
পেটের পেছনের দিকে কিডনির অবস্থানে ব্যথা হয়। পেশাবের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে তবে অনেক সময় তা খালি চোখে দেখা যায় না। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
জয়েন্ট, হাড় অথবা শিরদাড়া আক্রান্তের ক্ষেত্রে
আক্রান্ত অঙ্গ ফুলে যাবে, ব্যথা হবে এবং শিরদাড়া বাঁকা হয়ে যেতে পারে।
কখনও কখনও যক্ষ্মার কারণে ফুসফুসের অন্ত ও বহিরাবরণের মধ্যে এক ধরনের তরল জমে এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পানির মতো দেখা যায় আবার কখনও রক্ত বা দুধের মতো দেখা যেতে পারে। একে বলা হয় পরাল ইফিউশন আবার একই কারণে হৃৎপিণ্ডেও এ ধরনের পদার্থ জমতে পারে। একে পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন বলে। এর ফলে বুকে ব্যাথা হয়, বুক ধড়ফড়, জ্বর, শ্বাস কষ্ট ও কাঁশি হতে পারে।
এছাড়া যুবতী মেয়ের কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে, তার জরায়ুতে যক্ষ্মা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। আবার মেয়েদের যৌনাঙ্গ, জরায়ু ইত্যাদি অঙ্গে আক্রান্তের ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথা হয়, দুই পাশে বেশি ব্যথা হতে পারে এবং পেটে হাত দিলে অনেক সময় শক্ত কিছু অনুমিত হতে পারে।
এসএ/