কোটা সংস্কার আন্দোলন
সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
প্রকাশিত : ০২:২৯ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৩:২৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৮ রবিবার
কোটা সংস্কারের দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষা সনদ গলায় ঝুলিয়ে ঝাড়ু হাতে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান হওয়ার কথা। এ জন্য সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নিতে শুরু করে। কিন্তু সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের অন্যতম এক সমন্বয়কারীকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তাদের এ কর্মসূচি তাড়াতাড়ি শেষ করার নির্দেশও আসে ছাত্র্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে।
রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়কারী বিন ইয়ামিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারী লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়ামিনকে ডেকে মধুর ক্যান্টিনে নিয়ে যান। মধুর ক্যান্টিনে আগে থেকেই বসা ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। ইয়ামিনকে সেখানে নেওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তাকে নানা প্রশ্ন করা করা হয়। এ সময় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ইয়ামিনকে বলেন,‘এখানে তোর আসার উদ্দেশ্য কী?’
ইয়ামিন উত্তর দেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না। আমি আমার বিশ্বাস থেকে এখানে এসেছি।’
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ইয়ামিনকে কোনো মানসিক চাপ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। তিনি বলেন, ‘তাঁর কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম, সে কী কারণে কোটা সংস্কার চায়, আর সে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে কি না।’
তবে আন্দোলনের সমন্বয়কারী হাসান আল মামুন বলেন, ইয়ামিনকে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা কয়েকজন মধুর ক্যান্টিনে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের তাড়াতাড়ি আন্দোলন শেষ করার নির্দেশ দেন ছাত্রলীগ নেতারা।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের পাঁচ দফা দাবি হলো—কোটা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়ে আনা, কোটাপ্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া, চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা, কোটার কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, চাকরিক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাটমার্ক ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা। গত ১৮ মার্চ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহার ও সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেখান থেকে আজকের এই অভিনব প্রতিবাদের ঘোষণা আসে। টিএসসি চত্বরে সন্ত্রাসবিরোধী শহীদ রাজু ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত গলায় শিক্ষা সনদ ঝুলিয়ে রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নর অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। ‘বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর ব্যানারে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
একে// এআর