২৫ মার্চকে জাতিসংঘ স্বীকৃতির ‘সুযোগ নেই’, বিকল্প পরামর্শ
প্রকাশিত : ০৯:০৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৮ রবিবার
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু জাতিসংঘ ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। তাই ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংগের স্বীকৃতির সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তাই তারা বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য বিকল্প পরামর্শ দিয়েছেন।
লেখক-গবেষক শাহরিয়ার কবির তার পরামর্শে বলেন, “জাতিসংঘে ইতোমধ্যে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সেই প্রস্তাবে স্বাক্ষরও করেছে। এখন ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সুযোগ নেই।”
শাহরিয়ার কবির বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের জাতিসংঘ স্বীকৃতি যে এখন সম্ভবপর নয়, তা সরকারকে স্পষ্ট করা উচিৎ। সেই সঙ্গে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক নয় মাসজুড়ে চলতে থাকা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করা দরকার।
“এই বিভ্রান্তির কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব হবে না। ২৫ মার্চের নয়, নয় মাসের গণহত্যার স্বীকৃতি চাই- এই বিষয়টি ক্লিয়ার করতে হবে।”
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতভাবে ২০১৫ সালে ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা কনভেনশন গৃহীত হয়েছিল বলে ওই দিনটি স্থির করে জাতিসংঘ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, “সরকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লবিং করার ক্ষেত্রে আন্তরিকতা ও পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।
"বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ানোর মতো সমর্থক দেশ মেজরিটি আকারে এখনও তৈরি হয়নি। সেই জায়গাটি তৈরি করতে হবে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান গণহত্যার স্বীকৃতির বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগী হতে বলেন।
“আল্টিমেটলি সরকারকেই জাতিসংঘে যেতে হবে। ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা হয়েছে। এই স্বীকৃতির জন্য যা যা করা দরকার, প্রয়োজনবোধে আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পড়েন দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়। তিনি `২৫শে মার্চের গণহত্যা` শিরোনামে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন।
প্রবন্ধে গণহত্যার উদ্দেশ্য ও ব্যাপকতা, ২৫শে মার্চের রাতে ও পরবর্তী নয় মাস ধরে চলমান গণহত্যার তাৎপর্য এবং এখনো পর্যন্ত স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিদের অপচেষ্টা ও টার্গেট কিলিং প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ওই রাতে শুধু ঢাকায় অন্তত ৭ হাজার বাঙালিকে হত্যা করে তারা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ওই রাতটি কালরাত হিসেবে পালিত হয়।
এমএইচ/এসি