ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চায় টিম হরাইজন

শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত : ১২:০৩ এএম, ২৭ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০১:০৯ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার

আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)’র কার্য নির্বাহী কমিটির নির্বাচন। ২০১৮-২০ সাল পর্যন্ত এই দুই বছর মেয়াদী কমিটিতে স্থান পেতে নির্বাচনী যুদ্ধের লড়াই করবে ৩টি প্যানেলে ২৬ জন আর স্বতন্ত্র হিসেবে ৫জন মোট ৩১ জন প্রার্থী। প্যানেলগুলোর মধ্যে ‘টিম হরাইজন’ এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর। বেসিসের সকল সদস্যদের নিয়েই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে চায় টিম হরাইজন।

প্যানেল পরিচিতি

টিম হরাইজন প্যানেলে প্রার্থী আছে মোট ৯ জন। এদের নেতৃত্বে আছেন বেসিসের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আলমাস কবীর। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন ইউওয়াই সিস্টেমস লিমিটেডের চেয়ারপারসন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা এ রহমান, বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের পরিচালক শোয়েব আহমেদ মাসুদ, স্পেকট্রাম সফটওয়্যার অ্যান্ড কনসালটিং লিমিটেডের ম্যানেজিং পার্টনার মুশফিকুর রহমান, জানালা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন, ক্রসওয়েজ আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ফাহিম তানভীর আহমেদ, শুটিং স্টার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিদারুল আলম, ড্রিম ৭১ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশাদ কবির এবং সফট পার্কের প্রধান নির্বাহী দেলোয়ার হোসেন ফারুক।

গ্রোয়িং টুগেদার

বেসিসের সকল সদস্যদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় টিম হরাইজন। আর এ কারণে টিম হরাইজন নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণার শিরোনাম নির্ধারণ করেছে  ‘গ্রোয়িং ট্যুগেদার’।  বেসিস সদস্যদের বিশেষ করে নতুন এবং ছোট পরিসরে থাকা সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বেড়ে উঠতে কাজ করার অঙ্গীকার টিম হরাইজনের।

টিম হরাইজনের যত অঙ্গীকার

প্যানেলের নেতৃত্ব দেওয়া সৈয়দ আলমাস কবির তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার নিয়ে কথা বলেন ইটিভি অনলাইনের সাথে। তিনি জানান, ‘গ্রোথ ইকো সিস্টেম’ তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে তার প্যানেল। সবার জন্য প্রয়োজনীয় সেবার জন্য ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ স্থাপনের কথাও জানান তিনি।

নির্বাচনে জয়ী হলে এসব সিস্টেম থেকে ক্ষুদ্র এবং নতুনসহ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অফিস স্পেস, অর্থায়ন, ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দক্ষতা অর্জন, আইনী সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমাধানের জন্য কাজ করবে এই প্যানেল।

তবে শুধু নির্বাচনে জয়ের জন্যই না বরং বাস্তবিক অর্থেই এসব বিষয় কার্যকরে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন আলমাস কবির। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে অনেকেই অনেক ধরণের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে আমাদের প্রচারণায় থাকা বিষয়গুলোতে আমাদের আন্তরিকতা আছে। আমি গত জানুয়ারি মাসে বেসিসের প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এসব বিষয়ে কাজ করছি আমরা”।

“ইতোমধ্যে বেসিসের সকল সদস্যরা যেন বিনামূল্যে আইনী পরামর্শ পেতে পারে এর জন্য একটি ল ফার্মের সাথে আমরা চুক্তি সম্পন্ন করেছি। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঐ প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি সম্পন্ন হলে সহজ শর্তে অর্থ ঋণ পাবে বেসিস সদস্যরা। এই কাজগুলো কিন্তু আমরা এখন থেকেই করছি। আর নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে এরকম আরও কিছু সেবা সদস্যদের দিতে পারব”।

অভিজ্ঞতা, চেতনা আর নতুনত্ব

টিম হরাইজনের দাবি তাদের প্যানেলের সদস্য নির্বাচনে বিবেচনায় রাখা হয়েছে অভিজ্ঞতা, বেসিসের লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেতনা এবং নতুন সদস্যদের। সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, “আমাদের প্যানেল তালিকা দেখলে বুঝবেন সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য আছেন যারা বেসিসের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে আছেন। অর্থ্যাত তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বেসিসের আরও উন্নয়ন করা সম্ভব। এক-তৃতীয়াংশ সদস্য আছেন যারা আগের কোন বছরগুলোতে কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন। অর্থ্যাৎ তাদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি বেসিসের যে মূল চেতনা এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নের যে তাগিদ তা তাদের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে। আর শেষ এক-তৃতীয়াংশ সদস্য আছেন যারা একে বারেই নতুন। তাদের নব্য শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বেসিসের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাব”।

নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আলমাস নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেগে ওঠা ‘ভোট ফর রাইট ক্যান্ডিডেট’ প্রচারণারও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “যারা এই প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে তারা খুবই ভালো একটি কাজ করেছেন। এর ফলে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ে সবাই আরও বেশি সচেতন হবে”।

নির্বাচনের আগে আর পরে

নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা যতটা সক্রিয় থাকেন পরে সেভাবে থাকেন না। কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতেও গলদঘর্ম অবস্থা হয় অনেক সদস্যের। টিম হরাইজন এর ব্যতিক্রম হবে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আলমান কবির বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি রেওয়াজ চালু করেছি যে, আমি অফিসে থাকাকালীন সময়ে যে কেউ আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। আমার কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যদেরকেও এই নির্দেশনা দিয়েছি। শুধু তাই নয়, আগে বেসিসের কাওরান বাজার অফিসে সদস্যদের নিয়ে সাক্ষাৎ পর্বের আয়োজন করা হতো। এতে অনেকেই আসতে পারতেন না অথবা আসতে কিছু সমস্যা পোহাতে হতো তাদের। এই সমস্যা দূরীকরণে আমি বেসিসকে বাইরে নিয়ে গেছি। ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় গিয়ে সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ ও সভা করেছে আমরা। তাই আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি যে, আমরা নির্বাচনের আগেও যেমন আছি পরেও তেমন থাকব”।

জয়ী হয়ে ধারাবাহিকতা রাখতে চায় টিম হরাইজন

আসন্ন নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে বেসিসের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় টিম হরাইজন। দলনেতা আলমাস কবির বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা বেশকিছু কাজ করেছি। এই কাজগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই আমরা। বেসিসের অন্যতম উদ্দেশ্য হল এর সদস্যদের জন্য সরকারের সাথে দেনদরবার করা। এই ইস্যুতে আমাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। আর ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য আমাদের তা বাস্তবায়নে কিন্তু খুব বেশি সময় নেই। আনকোরা নতুন কাউকে এনে ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করার সময় কিন্তু আমাদের কাছে নেই। তাই সকল সদস্যদের প্রতি আমাদের এই বার্তা থাকবে যে, যে কাজগুলো আমরা শুরু করেছি সেগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে হরাইজনকে জয়ী করুন”।

টিকে