মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবরোধের আহ্বান মার্কিন ধর্মীয় নেতাদের
প্রকাশিত : ০৯:৫৩ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৮ বুধবার
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তঃধর্মীয় সংগঠনের নেতারা মিয়ানমারের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপের আহবান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ববাসীকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে মিয়ানমারের ওপর এ অবরোধ আরোপের আহবান জানান তারা।
অবরোধের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা পরিচালনার জন্য দেশটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও আহবান জানান তারা। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হোটেলে আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধমে নিজেদের দাবিগুলো জানান এসব ধর্মীয় নেতারা।
‘বার্মায় গণহত্যা রোধে আন্তঃধর্মীয় জোট’ নামক এক সংগঠনের আহবানে বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন শেষ যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এমন আহবান করে সংগঠনটি। এর আগে সম্প্রতি সংগঠনটির ১৪ জন ধর্মীয় নেতা বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
বাংলাদেশ সফরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেন তারা। এসময় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাথে কথাও বলেন তারা। ১৪ জন সদস্যের মধ্যে দুই জন করে বৌদ্ধ, ইহুদী আর মুসলিম ধর্মীয় নেতা ছিলেন। বাকি নেতারা ছিলেন খ্রিস্টান ধর্মের।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর অবরোধের আহবানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন নেতারা। সেই সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী এবং উদার ভূমিকারও প্রশংসা করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
রোহিঙ্গাদের দাবির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসসহ প্রশাসন এবং সমাজে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি। একই সাথে, রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে আর্থিক তহবিল গঠনের কথাও জানায় আন্তঃধর্মীয় নেতারা।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের বৌদ্ধ নেতা এলান সেনাউকে বলেন, “আমি বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়েছি আর সেখানকার মানুষদের সাথে কথা বলেছি। নারী,পুরুষ আর শিশুসহ সবার ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছে তা নির্মমতার সকল ধাপ অতিক্রম করে যায়। বৌদ্ধ ধর্ম এমন নির্যাতন শেখায় না”।
সংগঠনটির এক ইহুদি নেতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতার দূত হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়া রাব্বি ডেভিড তার বক্তব্যে বলেন, “রোহিঙ্গা যেন তাদের নিজেদের ভূমিতে পূর্ণ মর্যাদায় ফিরে যেতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাব। মার্কিন প্রশাসনের ওপর এর জন্য আমরা প্রভাব বিস্তার করব। মিয়ানমার সেখানে যা করছে তা স্পষ্টভাবে গণহত্যা এবং জাতিগত নিধন”।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতা বব রবার্টস বলেন, “সেখানকার পরিস্থিতি আসলেই ভয়াবহ। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাবিকে সমর্থন জানাই যে, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ হলে তবেই তাদের ফেরত দেওয়া হবে। আমরা মনে করি এর জন্য প্রতিটি বাংলাদেশির গর্ববোধ করা উচিত। আমরা আপনাদের সাথে আছি। আমরা এক ধর্মের অনুসারী না তবে আমাদের আদর্শ ও নীতি একই”।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আন্তঃধর্মীয় নেতাদের সংগঠনের চেয়ারম্যান ইমাম মোহাম্মদ মজিদ বলেন, “এটা পরিষ্কারভাবে রোহিঙ্গা নিধন কর্মসূচি। যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতাদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে”।
সূত্র: ইউএনবি
//এস এইচ এস//টিকে