জোট চান তবে রাহুলকে মানতে পারছেন না মমতা
প্রকাশিত : ১২:৩১ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
সামনের লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজন্য তিনি বিজেপি বিরোধীদের নিয়ে জোট গঠন করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দিল্লিতে বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতার সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকও করেছেন মমতা। পরিকল্পিত জোটে কংগ্রেসকে চাইলেও রাহুলের নেতৃত্বে আস্থা নেই মমতার।
বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে তৃতীয় ইউপিএ মহাজোটে যোগ দিতে রাজি নন তিনি। মমতা চান, তারই বিকল্প প্রস্তাবনা ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনকেই বরং সমর্থন করুক কংগ্রেস। সে কারণে রাহুলের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করে গতকাল বুধবার রাজধানীতে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনে সক্রিয় ছিলেন মমতা। পরে সন্ধ্যায় ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকেও নিজের মতের ওপরই জোর দেন তিনি। দিল্লির ১০ নম্বর জনপথে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন মমতা। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তিনি কোনো তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ছেন না। তিনি চান, কংগ্রেস যুক্তফ্রন্টে থাকুক। তাতে বিজেপিকে হারানো সহজ হবে।
শারদ পাওয়ার থেকে শুরু করে কানিমোজি, ফারুক আবদুল্লাহর মতো নেতাদের মমতা গতকাল বুঝিয়েছেন, ২০১৯ সালের আগে তারা যেন তার প্রস্তাবিত ফেডারেল ফ্রন্টে যোগ দেন। তবে কংগ্রেসের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা শারদ পাওয়ার ওই প্রস্তাবে রাজি নন। উল্টো কংগ্রেস মমতাকে ইউপিএর আহ্বায়ক করার প্রস্তাব দিয়েছে। ডিএমকে নেত্রী কানিমোজি, এনসি নেতা ফারুকও ইউপিএ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেননি মমতাকে।
তবে রাহুলের সঙ্গে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলেও কংগ্রেসের জন্য দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চান না মমতা। মমতা এ প্রসঙ্গে বলেন, সোনিয়া গান্ধী তো কংগ্রেসেরই। তবে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন সূত্রের দাবি, আসলে রাহুলের নেতৃত্ব মানতে রাজি নন মমতা। সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করলেও তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে তার অবস্থানের কোনো বদল হচ্ছে না।
গতকাল বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেও দলটির অন্যতম নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির প্রশংসা করে মমতা বলেন, তিনি ভালো মানুষ।` এমনকি বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও কাজ করতে তার অসুবিধা হয়নি। এবারের দিল্লি সফরে তিনি নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কেও নীরব।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের বেশিরভাগই দখল করার ব্যাপারে দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মমতা। সে ক্ষেত্রে মোদির বিকল্প প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক শক্তিতে পরিণত হবেন মমতা। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য, নেতা ও কর্মী তাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। প্রধানমন্ত্রী পদের `দাবিদার` মমতাও গতকাল আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে জনসংযোগে সক্রিয় ছিলেন। মমতার প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনা রাজ্যে তার ভোটব্যাংকের প্রসার ঘটাবে বলেই তৃণমূল নেতাদের ধারণা।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
/ এআর /