বেসিস নির্বাচন বানচাল চেষ্টার পেছনে কারা?
প্রকাশিত : ০৯:১৩ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:২৯ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততো নাটকীয় ঘটনা বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা পাঠানোর একদিনের মধ্যেই তা আবার তুলে নেওয়া হয়। নির্বাচন হবে কি হবে না- এমন দোলাচালের পর অবশেষে ৩১ মার্চ নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে এমন কাণ্ডে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সবাই জানতে চাইছেন, ভোট না হলে কাদের লাভ আর এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারাইবা জড়িত রয়েছেন?
অভিযোগ উঠেছে, ‘টিম হরাইজন’ প্যানেলের এক প্রার্থী নির্বাচন স্থগিতের উদ্যোগের পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন। সমালোচনার মুখে ইতোমধ্যে ফারুক নির্বাচনী লড়াই থেকে নিজের প্রার্থীতাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসিসের তৎকালীন সভাপতি মোস্তফা জব্বার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন পরিচালক হিসেবে দেলোয়ার হোসেন ফারুককে বোর্ডে নিয়ে আসেন বর্তমান সভাপতি ও টিম হরাইজনের প্যানেল লিডার সৈয়দ আলমাস কবীর।
দায়িত্ব পওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে সমালোচিত হন ফারুক। সর্বশেষ ‘এক প্যানেলেই বেসিস নির্বাচন হবে’- এমন মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্বাচন বন্ধে যে ১১ টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে তাদের মধ্যে মধুমতি টেক, ভার্চুয়াল ডিজিটাল টেকনোলজিস লিমিটেড, আই-সফট কমিউনিকেশন লিমিটেড-এর ঠিকানা এবং দেলোয়ার হোসেন ফারুকের র্যাডিসন ডিজিটালের ঠিকানা একই যায়গায়। অর্থাৎ কারওয়ান বাজারের শাহ আলী টাওয়ারের চতুর্থ তলায়। এছাড়াও বেসিসের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪টির প্রস্তাবকও এই দেলোয়ার হোসেন ফারুক।
বেসিসের সদস্য ও ভোটার নিয়ামুল হাসান বলেন, দেলোয়ার হোসেন ফারুক সম্ভবত তার পরাজয় বুঝতে পেরে আসন্ন নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। ১১টি কোম্পানি মিলে নির্বাচন বানচালের যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিলো আমার মনে হয় সেটি পরিকল্পিত। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন ফারুক এটি একা করেননি। রয়েছে একটি চক্র।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বোর্ডের সভাপতি এবং ‘টিম হরাইজন’ প্রধান সৈয়দ আলমাস কবীর এই দায়ভার এড়াতে পারতেন। ফারুককে টিম থেকে বের করে দিলেই হতো। আলমাস কবীরের টিমের এক বা একাধিক সদস্য এমন একটি চক্রান্তের ভাগীদার, যেখানে বেসিসকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে এবং হাসির পাত্র বানানো হয়েছে। বেসিস সদস্যরা তাদের প্রাণের সংগঠন নিয়ে এ ধরণের চক্রান্তের চূড়ান্ত জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দেবে বলে তিনি আশা করেন।
এদিকে নির্বাচন বন্ধের চিঠি পাওয়ার পর ষড়যন্ত্রকারীদের নাম ও এর পিছনের হোতাদের পরিচয় প্রকাশ করার ঘোষণা দেওয়ার পর দুদিন কেটে গেলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও এ ঘটনায় বেসিসের এক সদস্যের বিষয়ে ‘টিম হরাইজন’ তাদের অবস্থান পরিস্কার না করায় বেসিস সদস্যদের মধ্যে হাতাশা বিরাজ করছে।
তারা বলছেন, বেসিস নির্বাচনে বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হলে বা সংখ্যাগরিষ্টতা পেলে পরবর্তীতে একজন সদস্যকে বেসিসের কোনও স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এমনকি বেসিস সভাপতির উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিম হরাইজনের প্যানেলভুক্ত প্রার্থী এবং বর্তমান বোর্ড পরিচালক ফারহানা এ রহমান জানিয়েছেন, হাতে সময় খুবই কম। এখন তদন্ত করে প্রকৃত সত্যটি বের করা কঠিন। তবে কেউ যদি সত্যিই এমন ষড়যন্ত্রের সঙ্গে থাকে, সে যে-ই হোক, তাকে শাস্তি পেতে হবে।
টিকে