ভূমি দিবসে উত্তাল গাজা, ইসরায়েলি গুলিতে নিহত ৭
প্রকাশিত : ০৬:১৮ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৩৩ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৪২তম ভূমি দিবস উপলক্ষে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের এই বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৫৫০ জন।
শুক্রবার গাজার ইসরায়েল সীমান্তের ছয়টি স্থানে এ বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ দমনে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালের ৩০শে মার্চ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ‘ভূমি দিবস’ পালন করে। ওইদিন নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাণ। তাদের স্মরণে ওই বছর থেকে প্রতি বছর ৩০মার্চ ভূমি দিবস পালন করে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। এদিকে ইসরায়েল ২০০৭ সাল থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এবছর ওই দিবসটি স্মরণে বিশাল বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলবে।
‘দ্য গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ নামে বিক্ষোভটি প্রতি বছর আয়োজিত হলেও এবার বিক্ষোভে রয়েছে ভিন্নতা। গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসসহ ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি উপদল এ প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
এবার গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের ছয়টি স্থানকে বিক্ষোভের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েলও। গাজা সীমান্তে শতাধিক শার্প শুটার (লক্ষ্যভেদ করতে দক্ষ সেনা) মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার।
বিক্ষোভের শুরুতে শুক্রবার সকালে খান ইউনিস শহরে এক ফিলিস্তিনি কৃষককে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। আরকে ব্যক্তি ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলায় আহত হয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এরপর একে একে আরো ছয় জন নিহত হন।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ এক ভাষণে বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দিনের পর দিন দেখিয়ে দিয়েছেন তারা বড় ধরনের কিছু করার জন্য উদ্যোগ নিতে পারেন। তিনি জানান, পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ফেরত পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের কোনও সমাধান তারা মানবেন না এবং সমঝোতায় রাজি হবেন না। এই বিক্ষোভ ইসরায়েলি দখল ও অবরোধের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণ যে ঐক্যবদ্ধ তা প্রমাণ করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডোর লিয়েবারম্যান গাজাবাসীদের প্রতি টুইটারে হুমকি দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘গাজার নেতৃত্ব আপনাদের জীবন নিয়ে খেলছে। আমার পরামর্শ হলো নিজেদের জীবন রক্ষা করুণ এবং উসকানিতে পা দেবেন না।’
ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি করার সরাসরি নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাপ্রধান লে. জে. গাদি আইজেনকোট বলেছেন, আমরা গাজা উপত্যকায় সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করছি। যে কোনও ধরনের নাশকতা এড়াতে সেনারা প্রস্তুত থাকবে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি গুলিতে ৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্তত ৫৫০ জন আহত হয়েছেন।
হামাসের প্রায় এক লাখ সক্রিয় সমর্থক এবারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হামাস নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি হুমকির জবাবে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল হায়ায় বলেন, ফিলিস্তিনির ইসরায়েলি হুমকিতে ভীত নয়। তারা ইসরায়েলি সীমান্ত লক্ষ্যে পদযাত্রা করবেই। সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
আর/টিকে