বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেন লুসি হল্ট
প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ৩১ মার্চ ২০১৮ শনিবার
৮৭ বছর বয়সী লুসি হল্ট বাংলাদেশের নাগরিত্ব পেয়েছেন। শনিবার বিকালে লুসি হল্টের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের সনদটি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।
এর আগে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি লুসি হল্টকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য তার ভিসা ফি মওকুফও করা হয়েছিল। এখন আর সেসবের প্রয়োজন হবে না।
লুসি জানান, এক সময় শেখ ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল তার, তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পেরে তিনি আনন্দিত। অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। গণভবনে এই অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুর আগে তার একটাই চাওয়া ছিল ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’ পাওয়া। এর মাধ্যমে তারা আশা পূরণ করল বাংলাদেশ।
এদেশের মাটি ও মানুষকে ভালবেসে ৮৭ বছর বয়সী লুসি জীবনের ৫৭ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। ভুলে থেকেছেন পরিবারকে। মানব হিতৈষী এ মহিয়সী নারী ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট।
মানুষের সেবা করার জন্য ১৯৬০ সালে বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন লুসি। এদেশে এসে অক্সফোর্ড মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ানো শুরু করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যশোর ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন তিনি। যুদ্ধের কারণে চার্চ বন্ধ করে সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান, কিন্তু লুসি হল্ট না গিয়ে যুদ্ধাহত মানুষদের সেবা দিয়েছেন।
২০০৪ সালে অবসরে যাওয়ার আগে খুলনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করেছেন লুসি হল্ট। অবসর জীবনে তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দিচ্ছেন।
অবসরের পর সবাই দেশে ফিরে গেলেও তিনি যাননি। বাংলাদেশে ও বরিশালের সঙ্গে তার আত্মার সম্পর্ক। বাকি জীবনটা বরিশালেই কাটিয়ে দিতে চান লুসি। তার শেষ ইচ্ছা, মৃত্যুর পরে তাকে যেন বাংলাদেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এমএইচ/টিকে