ভবিষ্যৎ জানানো ফেসবুক অ্যাপগুলো কতোটা নিরাপদ
প্রকাশিত : ০৭:৪৫ পিএম, ৩১ মার্চ ২০১৮ শনিবার
কতো বছর বয়সে আপনার বিয়ে হবে, বিয়ের পর আপনার ভবিষ্যৎ কেমন হবে অথবা কে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেন? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে এখন ফেসবুকে অ্যাপের লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়। তাই নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে এখন আর জ্যোতিষীর কাছে যেতে হয় না।
আপনি যখন ‘বিয়ের পর ভবিষ্যৎ কেমন হবে’ জানতে আগ্রহী হয়ে অ্যাপটিতে ঢুঁ মারবেন, তখন ওয়েবসাইটটিতে প্রথমে লেখা থাকবে—‘খেলাটি খেলতে এখানে ক্লিক করুন।’ তারপর তাতে ক্লিক করলে ফেসবুকে লগইন করতে বলা হবে এবং কিছু তথ্য দেখার অনুমতি চাওয়া হবে। অনুমতি দিলে কিছু সময় পর ফলাফল দেখাবে। ফলাফলটি বন্ধুদের সঙ্গে ফেসবুকে শেয়ার করতেও প্রলুব্ধ করা হবে।
শুধু তাই নয়, স্বর্গে যাবেন নাকি নরকে যাবেন তাও জানা যাবে লিংক থেকে। আপনার স্ত্রী কেমন মানুষ হবে, আপনি কবে মারা যাবেন এরূপ অনেক প্রশ্নের উত্তর জানাতে রয়েছে ফেসবুক অ্যাপ।
ফেসবুকের জন্য এমন অনেক অ্যাপই তৈরি করছেন ডেভেলপাররা। ফেসবুকের অ্যাপ্লিকেশন থেকে পাওয়া তথ্যগুলো অনেকে নিছক মজা হিসেবে নিলেও সত্যি ভেবে বিশ্বাস করেন কেউ কেউ। আদতে এসব তথ্যের কোনও ভিত্তি নেই।
অ্যাপগুলো তৈরি করার পেছনে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য রয়েছে। অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে কেউ ক্লিক করলে ব্যবহারকারীর ফেসবুক থেকে কিছু তথ্য নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়। এর মধ্যে ফেসবুক ইউজারের নাম, মেইল আইডি, মোবাইল নম্বর, ছবি, লাইক-শেয়ার, ফেইসবুকের বন্ধু তালিকা ও ম্যাসেজ দেখার অনুমতি ইত্যাদি থাকে। কিছু অ্যাপ ফেসবুকে আপ করা ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহারেরও অনুমিত নেয়। এভাবে মজার ছলে অ্যাপ ডেভেলপাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তথ্যগুলো নানা কাজে ব্যবহার করেন। বিক্রি করে দেওয়া হয় ফোন নম্বর ও ই-মেইল অ্যাড্রেসগুলো, যা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মারফত পণ্যের প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, তথ্য বিক্রির পাশাপাশি অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীর তথ্য বিশ্লেষণ করে হ্যাকিংয়ের অ্যালগরিদমে ব্যবহার করে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে (এআই) শক্তিশালী করতে অসংখ্য ছবির প্রয়োজন হয়। এ অ্যাপগুলো থেকে পাওয়া ছবিগুলো দিয়ে সে চাহিদা মেটানো হয়। পর্নো সাইটে বিকৃতভাবে ব্যবহারের মতো অনৈতিক উদ্দেশ্যেও অনেকে ছবিগুলো ব্যবহার করে থাকেন।
এ রকম মজা করতে গিয়ে ‘বিপদ’ না বুঝেই অনেকে অ্যাপগুলো ব্যবহার শুরু করেছেন। তাই অ্যাপগুলো দ্রুত রিমুভ করাই ভালো। যে অ্যাপগুলো অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিকর মনে হয় সেগুলোর রিমুভ করে দিন। কোন অ্যাপ কী কী তথ্য নিচ্ছে, তা অ্যাপটি চালু করার সময়ই দেখানো হয়। তাই ফেসবুকে অচেনা কোনো অ্যাপ ব্যবহার করার আগে দেখে নিতে হবে অ্যাপটি ব্যক্তিগত কোনও তথ্য নিচ্ছে কি-না কিংবা নিরাপদ কি-না।
একে//এসএইচ/