ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

খুলে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু

প্রকাশিত : ১০:৩৬ এএম, ২ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে চীনে। খুব শিগগিরই সেতুটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চীনা গণমাধ্যম। ৫৫ কিলোমিটার বা ৩৪ মাইল দীর্ঘ এই সেতু চীনের দক্ষিণে হংকং, ঝুহাই ও ম্যাকাওয়ের সঙ্গে এর চীনের সংযোগ স্থাপন করবে।

১৫.১ বিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিত হয়েছে এই প্রকল্পটি। এদিকে এত ব্যায়ে বিশ্বের আর কোথাও কোন সেতু নির্মিত হয়নি বলে দাবি করেছে আল-জাজিরা। ইংরেজি বর্ণমালার ‘ওয়াই’ আকৃতির মতো দেখতে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রায় ৭ বছর ধরে সেতুর কাজ চলার পর চলতি বছরেই তা সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চীনের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র। তিনি আরও জানান, সেতু নির্মাণে যে পরিমাণ স্টিল ব্যবহৃত হয়েছে তা দিয়ে অন্তত ৬০টি আইফেল টাওয়ার নির্মাণ করা সম্ভব।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ১৪টি দেশ থেকে বিখ্যাত প্রকৌশলীদের নিয়ে ২০০৯ সালে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে দেশটির সরকার। সেতুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহু ইয়ংগ্লিং বলেন, এটি তৈরিতে ৪ লাখ ২০ হাজার ২০০ টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে, যা দিয়ে ৬০টি আইফেল টাওয়ার বানানো সম্ভব। তিনি আরও জানান, পার্ল নদীর মোহনা অতিক্রম করে যাবে সেতুটি। সেতুটি ব্যবহার করে হংকং থেকে ঝুহাই যেতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগবে। যেখানে আগে সময় লাগত ৩ ঘণ্টার বেশি। ১২০ বছর কোনো মেরামত ছাড়া অনায়াসে ব্যবহার করা যাবে এই সেতু।

প্রকল্পটির পরিকল্পনা ব্যবস্থাপক গাও শিনলিং এএফপি জানান, ৬.৭ কিমি এই আন্ডারওয়াটার টানেল নির্মাণ করতে আমাকে রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়েছে। জলরোধী প্রযুক্তির মাধ্যমে ৮০ হাজার টন পাইপগুলো সংযুক্ত করাটা ছিল সবচেয়ে বেশি কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। যার অন্যতম বড় কারণ ছিল সমুদ্রের নিচে পানির তীব্র চাপ।
উল্লেখ্য, সেতুটি নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে দুর্ঘটনায় সাতজন শ্রমিক মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১২৯ জন। এদের বেশির ভাগই সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে পিছলে পড়েছিলেন।

জানা গেছে, ‘এক দেশ, দুই নীতি’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে চীনা সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে হংকং ও ম্যাকাওয়ের নেতারা এই সেতুর বিরোধীতা করে আসছেন। তাদের আশঙ্কা এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে অঞ্চল দুটিতে চীনের আরও কর্তৃত্ব বাড়বে। উল্লেখ্য, হংকং চীন থেকে স্বাধীনতা লাভ করলেও ১৯৯৬ সালে অঞ্চলটি স্বেচ্ছায় চীনের সঙ্গে আবার একীভূত হয়।

সূত্র: আল-জাজিরা
এমজে/