ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার
প্রকাশিত : ০১:১২ পিএম, ২ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার
ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। সর্বশেষ দুই কার্যদিবসে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে শেয়ারদরও। দু`দিনের ব্যবধানে বাজারের প্রধান সূচক ২১৩ পয়েন্ট বা প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। আর শেয়ারের বাজারদর বেড়েছে প্রায় ৯৫ শতাংশ। বাজারের এ উত্থানে নতুন করে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সংশ্নিষ্টরা মনে করছেন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণাতেই পুঁজিবাজারে এমন ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে।
সংশ্নিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, গতকাল দেশের দুই শেয়ারবাজারে ৪৭১ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর প্রায় অর্ধেকটা কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। যেখানে কিছুদিন আগের লেনদেনেও এদের অংশ মোটের মাত্র ১০ শতাংশেরও নিচে ছিল।
এর প্রভাবে ডিএসইএক্স প্রায় গতকালই প্রায় দেড়শ` পয়েন্ট বেড়ে ৫৭৪৭ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। একদিনে সূচকের এতটা বৃদ্ধি গত প্রায় ৩৫ মাসের রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালের ১০ মে একদিনে ১৫৫ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে সূচক বৃদ্ধির হার বিবেচনায় গতকালের উত্থান ২০১৫ সালের ২৫ মে বা সর্বশেষ ৩৪ মাসের সর্বোচ্চ। ওইদিন সূচকটি পৌনে ৪ শতাংশ বেড়েছিল। গতকাল বেড়েছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
সর্বশেষ দুই দিনে ডিএসইএক্স ২১৩ পয়েন্ট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যাংক এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির ভূমিকা ছিল বেশি। এই দুই খাতের ৫৩ কোম্পানির মধ্যে একটি বাদে সবগুলোর দর বেড়েছে। শুধু ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোর গড়ে দর বেড়েছে সোয়া ৪ শতাংশ, যা সূচক বাড়িয়েছে প্রায় ৬৫ পয়েন্ট। আর ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গড়ে সাড়ে ৩ শতাংশ দর বেড়েছে। এতে সূচক বেড়েছে প্রায় ১২ পয়েন্ট।
সংশ্নিষ্টরা জানান, গত জানুয়ারি থেকে শেয়ারবাজারে চলা দরপতনের প্রধান কারণ ব্যাংক খাতে হঠাৎ সৃষ্ট তারল্য সংকট। ব্যাংকের এডিআর সাড়ে ৪ শতাংশ কমানোর ঘোষণার পর ৪ জানুয়ারি থেকে ব্যাপক দরপতন হচ্ছে শেয়ারবাজারে। এ সময় ডিএসইএক্স সূচক ৮২৯ পয়েন্ট হারিয়েছে। ব্যাংক মালিকদের দাবির মুখে ব্যাংকের তারল্য সংকট সমাধানে এগিয়ে এসেছে সরকার, যার প্রভাব পড়েছে লেনদেনে। গত চার মাসের দরপতনের সময় যারা শেয়ার বিক্রি করে বাজার পর্যবেক্ষণে ছিলেন, তারা বিনিয়োগে ফিরতে শুরু করেছেন।
গতকাল শেয়ারদর ও সূচকে বড় উল্লম্ম্ফন হলেও লাগাতার দরপতনের মুখ থেকে ফিরে আসার লক্ষণ দেখা যায় গত বুধবার। তখনই খবর আসে, ব্যাংক মালিকদের দাবি অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আশ্বাস মিলেছে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয় তা ৪০ শতাংশ করার পক্ষে মত দেয়। সরকারের এমন তৎপরতায় বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
এরপর গত শুক্রবার রাতে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে তাদের আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে পারবে। এ ঘোষণা কার্যকর হলে ব্যাংকগুলো এডিআর সমন্বয় করা ছাড়াও তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে। তাতে ব্যাংক সুদের হারও কমে আসবে। শেয়ারবাজার সংশ্নিষ্টরা জানান, এ খবর গতকাল শেয়ারবাজারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
আরকে// এআর