ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১১ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন মিয়ানমারের মন্ত্রী: মাহমুদ আলী

প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ৩ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার

চরম নির্যাতনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে সেদেশের একজন মন্ত্রী কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

সোমবার মস্কোয় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই মন্ত্রীর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

১১ এপ্রিল মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াট আয়ে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।     

গত ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। রাখাইনে তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।

প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছিল মিয়ানমারকে। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করে ৩৭৪ জনকে রাখাইনের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে কোনো সময় তাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত তারা।

এই আলোচনার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার মিয়ানমার সফর করেছেন। অপরদিকে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল খ শোয়েসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলাদেশে এলেও তাদের কেউ এখনও রোহিঙ্গা শিবিরে যাননি।

১১ এপ্রিল উইন মিয়াট আয়ে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করলে প্রথম মিয়ানমারের মন্ত্রী হিসেবে সেখানে যাবেন তিনি।

লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে রাশিয়ার সহযোগিতা চান মাহমুদ আলী। গত অগাস্টে রোহিঙ্গা সংকট তীব্র আকার নেওয়ার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনায় মিয়ানমারের পক্ষে ছিল রাশিয়ার অবস্থান।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে মাহমুদ আলী জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে সম্পৃক্ত করতেও রাজি হয়েছে মিয়ানমার।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ‘একসঙ্গে কাজ করতে’ রাশিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

মাহমুদ আলী বলেন, “বাংলাদেশ খুব বড় দেশ নয়। এটা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। তাই আমরা বাড়তি লোক নিতে পারি না। আশা করছি, সবাইকে (রোহিঙ্গাদের) ফিরিয়ে নেবে।”

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়ার সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মস্কোর সঙ্গে সার্বিক সম্পর্ক ‘ভালো। আন্তর্জাতিক ফোরামেও আমরা একসঙ্গে কাজ করি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে মস্কোর সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ আলী বলেন, কখন থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হবে তার সময়সীমা নির্ধারণ করাটা ‘সহজ নয়’।

রাখাইনে তাদের থাকার মতো কোনো ঘর না থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কেবল অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলেই তারা ফিরতে পারে।

ভারত, চীন, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো রাখাইনে অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে আসতেও রাশিয়ার প্রতি অনুরোধ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসি