ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১২ ১৪৩১

প্রতিদিন স্নান করলে যে সুবিধা পাবেন

প্রকাশিত : ০২:৩১ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

আমরা সবাই সকাল-বিকেল স্নান করে থাকি। আর এই গরমে তো কথাই নেই। কিন্তু স্নান করি কেন আমরা, এই উত্তর কেউ দিতে পারেন?
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ঠাণ্ডা জলে করুন কি গরম জলে, নিয়মিত স্নান করলে একাধিক উপকার মেলে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু জটিল রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়। ফলে একথা বলা যেতেই পারে যে নিয়মিত সকাল-বিকেল স্নান করলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো! তবে এখানেই শেষ নয়, স্নান করার আরও অনেক উপকারিতা আছে। এই কারণেই তো জন্মানোর কিছু সময় পর থেকেই নবজাতককে স্নান করানো শুরু হয়ে যায়। সেই যে শুরু হয়, চলে যত দিন না মৃত্যু ছোবল মারছে, ততদিন পর্যন্ত! তবে কী কী উপকার পাওয়া যায় নিয়মিত স্নান করলে?
১. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
শুনে অবাক লাগলেও একথার মধ্যে কোনও ভুল নেই যে নিয়মিত স্নান করলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে চোখে পরার মতো। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে স্নান করার সময় ব্রেনের অন্দরে ইনফ্লেমেশন রেট কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেমেরও কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন পাওয়ার বাড়তে সময় লাগে না।

২. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে:
স্নানের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের কী সম্পর্ক? গবেষণা বলছে ডায়াবেটিস রোগীরা যদি টানা ৩ সপ্তাহ, দৈনিক ২০-৩০ মিনিট গরম জলে স্নান করেন, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ১৩ শতাংশ কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।

৩. ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে প্রতিবার ঠাণ্ডা জল মাথায় ঢালার সময় কোনও এক অজানা কারণে আমাদের ফুসফুস সংকুচিত হয়ে যায়। এমনটা বারে বারে হওয়ার কারণে লাং-এ অক্সিজেনের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, যে হারে আজকাল বায়ুদূষণের প্রকোপ বাড়ছে তাতে ফুসফুসকে অতিরিক্ত চাঙ্গা না রাখলে কিন্তু বিপদ! তাই যতই ল্যাথারজিক লাগুক না কেন, প্রতিদিন সকাল-বিকাল স্নান করা দরকার!

৪. পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ে:
পুজোর ঘরের ডেকরেশন ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে না করলে কিন্তু মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে! পুজোর ঘরের ডেকরেশন ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে না করলে কিন্তু মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে!

৫. হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
বেশ কিছু গবেষাণায় দেখা গেছে হালকা গরম জলে স্নান করলে সারা শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে কোনও ধরনের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, নিয়মিত উষ্ণ গরম জলে স্নান শুরু করলে রক্তচাপও স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
শুধু ঠাণ্ডা নয়, গরম জলে স্নান করার সময়ও ভাসকুলার এবং লিম্ফ সিস্টেম থেকে প্রচুর মাত্রায় ইমিউন সেলের জন্ম হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যত শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তত রোগভোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়। এবার বুঝেছেন তো প্রতিদিন স্নান করার গুরুত্ব কতটা!

৭. রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে:
গবেষণায় দেখা গেছে স্নান করার সময় ঠাণ্ডা জলের স্পর্শ লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে একদিকে যেমন হার্টের পাশাপাশি দেহের ভাইটাল অর্গানদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে রক্তচাপও কমতে থাকে। ফলে সার্বিকভাবে শরীর একেবারে তরতাজা হয়ে ওঠে।
৮. স্ট্রেস লেভেল কমতে থাকে:
দিন শেষে ক্লান্তি এবং স্টেস যখন ঘারে চেপে বসে, তখন যেন পা এগতে চায় না। মনে হয় জীবনটা যেন থেমে গেছে কোনও বোল্ডারে বাঁধা পেয়ে। এমন অবস্থায় মহৌষধির কাজ করে এক বালতি ঠান্ডা জল। সেটা যখন মাথা হয়ে সারা শরীরে ঝাপিয়ে পরে, তখন আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে বিটা-এন্ডোরফিন এবং নোরাএড্রেনালিনের মতো হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়।

তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই।
এসএইচ/