ঢাকা, রবিবার   ০৩ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

সীতাকুণ্ডে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন 

প্রকাশিত : ০৮:০৯ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১২:০২ এএম, ৭ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার

সীতাকুণ্ডে দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ মহাসড়কের দাবীতে  আগামীকালের (৭ এপ্রিলের) গৃহীত মানববন্ধন কর্মসূচির সমর্থনে আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করছেন মানববন্ধন বাস্তবায়ন পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ হাসান চৌধুরী।

তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চল সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। বিশেষকরে অদক্ষ ও লাইসেন্স বিহীন চালক দ্বারা পরিচালিত পরিবহনগুলো এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের আতঙ্কের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। গত তিন মাসে এখানে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৩জন। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। এক বছরে মারা গেছে ১৪২জন।

তিনি আরও বলেন, যানবাহনগুলোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়া, রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে পথচারীদের হতাহতের ঘটনা এখানকার নিত্য দিনের। লাগাতার সড়ক-দুর্ঘটনা মহামারিতে রূপ নেওয়ায় সর্বস্তরের সীতাকুণ্ডবাসী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের অংশগ্রহণে আগামীকাল শনিবার দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ মহাসড়কের দাবীতে সীতাকুণ্ডব্যাপী  মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সিটি গেট থেকে সীতাকুণ্ডে বড়দারোগাহাট পর্যন্ত (দীর্ঘ ৪০কিলোমিটার) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিমপাশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। এতে সীতাকুণ্ডে ২শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, সেবামূলক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১টি পৌরসভার প্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের সম্মতি দিয়েছেন। আমাদের প্রত্যাশা, সমাজের সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ এ মানববন্ধনে শরিক হবেন।

মনির আহমদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড এলাকার এ ক্রমবর্ধমান দুর্ঘটনা-সঙ্কট নিরসনের জন্যে আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি সরকার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করতে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখবেন। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবেই- কখনো তা বন্ধ করা যাবে না। তবে এটা যতবেশি কমিয়ে আনা যায়- সে ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও সরকারি-বেসরকারি পদক্ষেপ নিতে আমরা আজ আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি।

প্রতিদিন সংবাদপত্রে অনিবার্য খবর হলো সড়ক-দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় অনেক তাজাপ্রাণ, অনেক সুপ্ত সম্ভাবনাকে। পঙ্গুত্ব বরণ করে অনেকের জীবনে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে দুর্ঘটনার জের সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অকালে কোনো মা সন্তানহারা, স্ত্রী স্বামীহারা কিংবা সন্তান পিতৃহারা হোক- তা আমরা কখনো চাই না।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফোরলেন হলেও ট্রাফিক ও সড়ক ব্যবস্থাপনা নেই  উল্লেখ করে তিনি বলেন আরও বলেন, মহাসড়কের পাশেই কয়েকটি কনটেনার টার্মিনাল গড়ে ওঠায় পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ গাড়ীগুলো ওল্টোপথে টার্মিনাল ইয়ার্ডে ঢুকা ও বের হওয়ার পাশপাশি মহাসড়কের ওপর এলোপাতাড়ি যত্রতত্র দাঁড়িয়ে এক নৈরাজ্য তৈরি করে। যাত্রীবাহী গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে না, সৃষ্টি হয় যানজট। তবে এ এলাকার জনসাধারণের সবচেয়ে  মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ রুটে চলাচলকারী পরিবহন ‘সেইফ লাইন’। এ লাইনে একশটির মতো ‘সেইফ লাইন  স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিলেও দুইশ’রও বেশি চলছে অবৈধভাবে। লাইসেন্সবিহীন অনভিজ্ঞ চালকদের হাতে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ যাত্রীরা। মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হয়। অন্যদিকে মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে ফুটপাত অবৈধভাবে দখলকরে ভাসমান দোকান গড়ে তোলা, রাস্তার পাশে ইট-বালি রেখে সেখান থেকে গাড়িতে লোড-আনলোড করার ফলে যানবাহন চলাচলে দারুণ অন্তরায় সৃষ্টি হলেও এসব দেখার কেউ নেই। সীতাকুণ্ড সদরে সেইফ লাইনগুলোর নির্দিষ্ট কোনো স্টপেজ নেই। রাস্তার পাশে ইচ্ছে মতো এসব গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে লোক জনের চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি হয়। সবকিছু মিলিয়ে এখানকার পরিবহন সেক্টরে বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে।

 টিকে