জিসিস নির্বাচন
মান্নানের ভিত্তি জনমত ও হাসানের ‘ত্যাগ’
আলী আদনান, গাজীপুর থেকে ফিরে
প্রকাশিত : ১১:০০ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১১:০২ এএম, ৮ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার
ভোটের হাওয়া বইছে গাজীপুরে। ঢাকার সবচেয়ে নিকটবর্তী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি)-এ সম্প্রতি দ্বিতীয় বারের মতো ঘোষিত হয়েছে নির্বাচনী তফসিল। জনসংখ্যার দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ হিসেবে এই সিটিতে আগামী ১৫ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চোখে নেই ঘুম।
আমাদের দেশে সাধারণ মানুষদের নির্বাচনের প্রতি রয়েছে যথেষ্ট আগ্রহ। তাই ভোটের আগেই নির্বাচনী আমেজে ভরে যায় দেশ। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম নয়। সেখানে এখন পুরোদমে নির্বাচনের আমেজে ভাসছে সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অলি-গলি। এখনো নির্বাচনের অনেক সময় বাকি থাকলেও নির্বাচনে প্রধান দুটি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন চেয়ে ছেয়ে ফেলেছে গাজীপুরের প্রতিটি দেওয়াল। কে নির্বাচন করছেন সেটা যেমন ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কে কোন দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়নটাকেই এখন ভোটের ফলের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন নগরবাসী।
আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও হয়ে উঠেছে অর্থবহ। একদিকে যখন নেতারা হিসেব করে দেখছেন কাকে মনোনয়ন দিলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে বিজয়ের মালা ছিনিয়ে আনতে পারবে, অন্যদিকে সাধারণ ভোটাররা হিসেব করে দেখছেন এলাকায় কার কেমন অবদান। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অতীতের কাজগুলো যেমন তাদের কর্মীরা ফলাও করে প্রচার করছে। তেমনি অনেকে নিজ নিজ পছন্দের নেতাদের গুণকীর্তন করতে মহা ব্যস্ত।
জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপি যখন নানা ঘাত প্রতিঘাত মোকাবেলা করে এগুচ্ছে, তাদের দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া যখন কারাগারে ঠিক তখনই গাজীপুরে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এম এ মান্নান টেলিভিশন মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানকে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে। তবে বিধি বাম! বিপুল জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত কাঙিক্ষত উন্নয়ন করতে দেখাতে ব্যর্থ হন এমএ মান্নান। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। মেয়াদকালের বড় সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। এখনো তার বিরুদ্ধে রয়েছে ত্রিশটিরও বেশি মামলা।
গাজীপুরকে ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’ বলা হলেও এখানে বিএনপিকে দুর্বলভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। অতীতের বিভিন্ন নির্বাচনে তার প্রমাণ মিলেছে ঢের। সেই হিসেবে এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নির্বাচনকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ করেছে বলে অনেকের ধারণা। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতির মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করানোকে মাইল ফলক হিসেবে বিবেচনা করছেন দলটির নেতা কর্মীরা।
যেহেতু গাজীপুরের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ভোট ব্যাংক রয়েছে সেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করাতে হলে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্রার্থীর বিকল্প নেই। সেই দিকটি বিবেচনায় থাকলেও ইতোমধ্যে দলটির মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। যদিও বা দীর্ঘদিন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন, তথাপি তফসিল ঘোষণার আগে থেকে মনোনয়ন পেতে দলের সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি সাধারণ কর্মী সমর্থকদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় দলটি ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করছে। এ প্রতিবেদনটি লিখা পর্যন্ত যারা মনোনয়ন চেয়ে ফরম সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালাম, জেলা বিএনপির সাহিত্য-প্রকাশনা সম্পাদক ও কাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যঅন শওকত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরাফত হোসেন ও বর্তমান মেয়র এমএ মান্নানের ছেরে মঞ্জুরুল ইসলাম রনি।
এ বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলার সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, আগামীকাল (রোববার) সন্ধ্যায় বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মনোনয়ন বোর্ড সেখানে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী মনোনীত করবেন বলে জানান তিনি।
যারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তাদের কাউকেই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার দিক থেকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। স্থানীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে মূলত দ্বিমুখী প্রতিযোগিতা চলছে। এই দ্বিমুখী প্রতিযোগিতার একদিকে আছেন বর্তমান মেয়র এমএ মান্নান, অন্যদিকে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার। দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দু`জনেরই রয়েছে অনেক সফলতা। মনোনয়ন যাকেই দেওয়া হোক না কেন একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এমএ মান্নান গাজীপুরে বিএনপির রাজনীতিতে জনপ্রিয় মুখ। ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন। অনেকে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর অন্তর্কোন্দলই তার বিজয়ের পথকে প্রশস্ত করেছিল। তা না হলে আজমত উল্লাহ খানের মতো চৌকস রাজনীতিবিদকে ভোটের রাজনীতিতে ঘায়েল করা চাট্টিখানি কথা নয়।
এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ ১৯৫০ সালে গাজীপুরের সালনা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র এমএ মান্নান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়নে এমএসসি পাস করেন। স্থানীয় টঙ্গী সরকারি কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন পরবর্তীতে কাজী আজিমুদ্দিন সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে (তৎকালীন জাগদল) যোগ দেন। শুরুতে রাজনীতির মাঠ তার জন্য মসৃণ না হলেও তিনি ধাপে ধাপে তার পথটি তৈরি করে নেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মান্নান গ্রাম সরকার থেকে এমপি-প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র হন মোহিত করার মত ব্যাক্তিত্ব দিয়ে। সাংগঠনিকভাবে তিনি একে একে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি, কেন্দ্রীয় বিএনপি`র যুগ্ম মহাসচিব ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
এমএ মান্নান ১৯৯১ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এর ফল হিসেবে তাকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও পরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০১৩ সালে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হলে পুরো মেয়াদে কখনোই তিনি শান্তি ও স্বস্তিতে কাটাতে পারেননি। কারাগারেই তাকে কাটাতে হয়েছে আড়াই বছরের মতো। তার নামে মামলা রয়েছে ত্রিশটিরও অধিক। এবারের নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপির সমর্থক থেকে শুরু করে নগরবাসী মনে করে মান্নানের জনপ্রিয়তা ও জনমতই তাঁর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। যেজন্য প্রতিপক্ষরা তার নামে একের পর এক মামলা দিয়ে জেলে রাখে। আওয়ামী লীগ মনে করে গাজীপুরে মান্নানই বর্তমানে বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, যিনি মনোনয়ন পেলে এবারের নির্বাচন তুমুল প্রতিদ্বদ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমার ওপর এতো বেশি নির্যাতন চালিয়েছে যে তা ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে সত্যিকারের রাজনৈতিক কর্মীকে দমন পীড়ন করে দাবিয়ে রাখা যায় না। আমিও দমনে ভীত নই। আমার বিশ্বাস এই দমন নির্যাতনের ফলে আমার জনপ্রিয়তা বেড়েছে।’
হাসান উদ্দিন সরকার মনোনয়ন চাচ্ছেন এমন ইঙ্গিতে এমএ মান্নান বলেন, তিনি বারবার দল পাল্টানো নেতা। দলের দু:সময়ে তিনি গা ঢাকা দেন। তার প্রতি নেতা কর্মীদের আস্থা নেই।
কিন্তু এমএ মান্নানের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, এমএ মান্নান বিরোধী দলের রাজনীতিতে যোগ্যতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তার ভুল সিদ্ধান্ত ও অদক্ষতার ফলেই নেতা কর্মীরা বার বার বিপদে পড়েছে। এমএ মান্নান বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন হাসান উদ্দিন সরকার।
হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকার পরিবারের সন্তান। শিক্ষানুরাগী হিসেবে তার অবদান সর্বজন স্বীকৃত। এ পর্যন্ত ত্রিশটিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে তিনি গাজীপুরকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন কয়েকশ’ বছর। তার প্রতিষ্ঠিত সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী গাজীপুরের মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজনীতির মাঠে পোড় খাওয়া এই নেতা বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপি`র সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। তার সমর্থকরা মনে করেন বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর হাসান সরকারের পান নি কিছুই। তার ‘ত্যাগ’ অন্য যেকোনো নেতার চেয়ে বেশি।
হাসান উদ্দিন সরকার খুব অল্প বয়সে টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ আমলে জাতীয় পার্টি থেকে পরপর দু`বার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা আছে তার। হাসান সরকারের ত্যাগের বিষয়ে তার সমর্থকেরা বলে থাকেন এম এ মান্নানের জীবনে যা কিছু অর্জন তার পেছনে হাসান সরকারের অবদান রয়েছে। ১৯৯১তে যখন মান্নান এমপি নির্বাচিত হন, সেই নির্বাচনে হাসান সরকার অংশ না নিয়ে কার্যত মান্নানকে সমর্থন দেন। অথচ তার আগের দুই সংসদে টানা এমপি ছিলেন হাসান সরকার। ২০০১ সালের নির্বাচনে হাসান সরকার বিএনপির মনোনয়ন পেলে মান্নান তাকে ছাড় দেননি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন, ওই নির্বাচনে দলের প্রার্থীর ভরাডুবি হয়। ২০০৩ সালের উপ নির্বাচনে মান্নান মনোনয়ন পেলে হাসান সরকার অভিমান ভুলে তার পক্ষে কাজ করেন। ২০১৩ সালের মেয়র নির্বাচনে হাসান সরকার ছিলেন মান্নানের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি। ওই নির্বাচন দল মনোনয়ন দেয় মান্নানকে। হাসান সরকার অতীতের সব তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে কাধে কাধ মিলিয়ে মান্নানের হয়ে কাজ করেন। সর্বশক্তি নিয়োগ করে মান্নানের পক্ষে কাজ করে তাকে জয়ী করার মুখ্য ভূমিকা রাখেন হাসান সরকার। হাসান সরকারের সমর্থকদের অভিযোগ, মান্নান মেয়র হয়ে হাসান সরকারের এসব ত্যাগের কথা মনে রাখেন নি। হাসান সরকার মহানগর কমিটির সভাপতি পদ চাইলে মান্নান প্রতিদ্বদ্বিতা ছুড়ে দেন। যে কারণে এখনও মহানগর কমিটি হয়নি।
বন্ধু থেকে শত্রু
রাজনীতির মাঠে কে কখন কার বন্ধু বা শত্রু হয় তা নিয়ে কোন বিজ্ঞ জ্যোতিষীও আগে বলতে পারেন না বা বলা সম্ভব হয়না। যেমনটি হয়েছে এমএ মান্নান ও হাসান উদ্দিন সরকারের ক্ষেত্রে। কে জানত এ দু`জন একদিন মুখোমুখি হবেন একটি চেয়ারের আশায়।
এ প্রসঙ্গে হাসান উদ্দিন সরকার একুশে টেলিভিশন অনলাইনের এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আমি যখন জনপ্রতিনিধিত্ব করি তখন মান্নান ছাত্র। টঙ্গী আজিম উদ্দিন সরকার কলেজে মান্নানের চাকরীটাও আমি নিয়ে দিয়েছি। তার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি।
তার ত্যাগ সম্পর্কে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী আজমল হোসেন বলেন, হাসান উদ্দিন সরকার একজন নির্লোভ মানুষ। তিনি ত্যাগ স্বীকার করতে জানেন। টাকা পয়সা যেমন অকাতরে বিলাতে পারেন, তেমনি ক্ষমতার মোহ তার মধ্যে নেই। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এমএ মান্নানকে সমর্থন দিয়ে তিনি সিটি নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি বিরোধিতা করলে এমএ মান্নান বিজয়ী হতে পারতেন না। এর আগে গাজীপুর- ২ আসনের উপনির্বাচনেও তিনি এমএ মান্নানকে সমর্থন দিয়ে যান। তারও আগে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন এমএ মান্নানকে।
তবে আজমল হোসেনের বক্তব্য অস্বীকার করলেন মান্নান সমর্থক মো. আবু বক্কর। তিনি বলেন, রাজনীতি রাজনীতির মতো করেই চলে। হাসান উদ্দিন সরকার দল পাল্টানো নেতা। জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপি`তে এসে হুট করে নির্বাচন করার মতো দক্ষতা বা অবস্থান তার ছিল না। তাই তিনি সিটি নির্বাচন করেন নি।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান মেয়র এমএ মান্নানের ভিত্তি জনমত, অন্যদিকে হাসান উদ্দিন সরকারের ভিত্তি অতীতের ত্যাগ। তবে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটবে আগামীকাল। কে হচ্ছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি`র প্রার্থী তা জানতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে রোববার রাত পর্যন্ত।
এসি/টিকে