বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার আওতা
প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার
মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সুবিধার আওতা বাড়ছে বলে জানা গেছে। তাদের অবর্তমানে পরিবারের সব সদস্য সুবিধা ভোগ করবেন। সব মিলিয়ে সোয়া দুই লাখের বেশি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা কল্যাণ সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা এবং ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে ট্রাস্টি বোর্ড, নির্বাহী কমিটি গঠনের পাশাপাশি তহবিল পরিচালনা, নিরীক্ষার বিধানও খসড়া আইনে রাখা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্ধন করে সুবিধাভোগীর আওতা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় সামরিক বাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত সদস্যদের এই প্রথম মুক্তিযোদ্ধা ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে `মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮`-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় এটি অনুমোদন হতে পারে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ দিন `স্ট্যান্ডার্ডস ওজন ও পরিমাপ আইন, ২০১৮`-এর খসড়াও মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হতে পারে।
প্রস্তাবিত আইনে মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সুবিধার আওতা বাড়ছে। তাদের অবর্তমানে পরিবারের সব সদস্য সুবিধা ভোগ করবেন। সব মিলিয়ে সোয়া দুই লাখের বেশি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা কল্যাণ সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা এবং ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে ট্রাস্টি বোর্ড, নির্বাহী কমিটি গঠনের পাশাপাশি তহবিল পরিচালনা, নিরীক্ষার বিধানও খসড়া আইনে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলে বিল আকারে সংসদে পাসের জন্য উত্থাপন হবে।
মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আজাহারুল হক জানান, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের আওতায় এতো দিন কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত হতো। ওই অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে তাদের নির্ভরশীল পরিবারের সদস্য, অর্থাৎ বাবা-মা অথবা ভাই-বোন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন না। এবার নতুন আইনে বিষয়টি সংযোজন করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে ট্রাস্টের কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে।
খসড়া আইনে ২৪টি ধারা রয়েছে। ছয়টি অধ্যায়ে বিভক্ত খসড়ার প্রথম অধ্যায়ে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নতুন করে পরিবর্ধন করা হয়েছে। আইনের ২(২) ধারায় মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, `একাত্তরের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সকল ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তারা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ব্যক্তি বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন, বাংলাদেশি পেশাজীবী ও নাগরিক একই সময়ে বিদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত গঠন করেছেন; যারা মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা/কর্মচারী/দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, সশস্ত্র বাহিনী, গণবাহিনী ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, নৌ-কমান্ডো, আনসার বাহিনীর সদস্য, যারা মুক্তিযুদ্ধে সংক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন; মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুজিবনগর সরকারের সহিত সম্পৃক্ত তৎকালীন এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লি) ও এমপিএ-গণ (মেম্বার অব পার্লামেন্টারি অ্যাসেমব্লি) যারা পরে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হন, (চ) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসরদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিত (বীরাঙ্গনা) নারীগণ, (ছ) স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়গণ, (ঝ) মুক্তিযুদ্ধের সময় আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী মেডিকেল টিমের ডাক্তার নার্স ও সহকারীরা। তবে শর্ত থাকে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধকালীন বয়স নূ্যনতম সাড়ে ১২ বৎসর (সংশোধিত বিধান অনুসারে) হতে হবে।`
এসএইচ/