ঢাকা, শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১৪ ১৪৩১

ঢাবির ইতিহাসে এমন হামলার নজির নেই: এ কে আজাদ    

প্রকাশিত : ০৯:০৩ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে রোববার রাতে যে জঘন্য হামলার ঘটনা ঘটেছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ চৌধুরী।   

সোমবার দুপুরে ভিসির বাসভবন পরিদর্শন এবং তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর পর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  

আজাদ চৌধুরী বলেন, রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তিটির বাসভবনের প্রতিটি কক্ষ, অফিস, ফাইল ও কেবিনেট যেভাবে ভাংচুর ও পোড়ানো হয়েছে তা সমাজে ভাবনার উদ্রেক করে।

তিনি বলেন, ছাত্র হিসেবে, সিন্ডিকেট মেম্বার, টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও ভিসি হিসেবে ১৯৬৪ সাল থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমি জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ৫২ বছরের জীবনে কোনো ভিসির বাসভবনে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা হয়নি। 

তিনি বলেন, আমি কোটা সংস্কারের পক্ষের লোক। কোটা একদম তুলে দেয়া যাবে না। সংখ্যালঘিষ্ঠ, অনগ্রসর, ছোট অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য খুব বড়জোর শতকরা ১৫ ভাগ কোটা থাকতে পারে। কিন্তু কোটা সংস্কারের নামে আজ যা দেখলাম তাতে তো সন্দেহ হয়! এ হামলা কি কোটা সংস্কারের জন্য, নাকি অন্য কিছুর জন্য?’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ভিসির বাসভবনে অন্য কোনো হামলা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে সাবেক এ ভিসি জানান, সম্ভবত ১৯৮৪ সালে তৎকালীন ভিসি শামসুল হুদা রংপুরের একটি কলেজ পরিদর্শনে গেলে সেদিন সন্ধ্যা বেলায় তার বাড়ির সিড়িতে আগুন লাগানো হয়। তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েরা ওই সময় উপরে ছিলেন, তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। শামসুল হুদা সাহেব ফিরে এসে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের একজন বাইরে থেকে তৎকালীন ভিসির বাসভবনে ওপেন ব্রাশ ফায়ার করে। ওই ভিসি পেছন পথে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান।

তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সায় দেয়ার পরও এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা কি বোঝাতে চেয়েছে তা বোধগম্য নয়। তারা কি শিক্ষা পেয়েছে? তাদের কারণে গোটা জাতি আজ লজ্জিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, রোববার রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে প্রতিটি কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। পরে অগ্নিসংযোগও করা হয়।

ওই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সমিতির সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হয়ে বহিরাগতদের মাধ্যমে এ হামলা চালানো হয়েছে।

আরকে//এসি