নি:সঙ্গ মানুষদের সঙ্গ দেওয়ার আয়োজন হয়েছে যে শহরে
প্রকাশিত : ০৬:১৮ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার
নি:সঙ্গ জীবন অনেকের কাছে একটি বড় ব্যাধির মতো। পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে এ সমস্যা অনেক প্রকট। বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়েসে নি:সঙ্গতা মানুষকে চূড়ান্ত অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়। অ্যালকোহল, সিগারেট এবং মোটা হয়ে যাওয়ার মতোই নি:সঙ্গতাও খারাপ বিষয়। এ সমস্যা মোকাবেলার জন্য ব্রিটেনের একটি শহরে অভিনব এক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নি:সঙ্গ বৃদ্ধদের সঙ্গ দেওয়া এর মূল উদ্দেশ্য। ইংল্যান্ডের পশ্চিমে ফ্রোম নামের ছোট এক শহরে এটি চালু হয়েছে।
এ শহরের একজন বৃদ্ধা সু। তিনি তাঁর বাড়িতে একা থাকেন এবং তিনি ঘরের বাইরে যেতে পারেন না।
তিনি বলেন, আমাকে নানা ধরনের মানুষ দেখতে আসে। এটাই আমার দরকার। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয়। আমি তখন ভাবতে পারি যে পৃথিবীতে ভালো কিছু আছে।
তিনি আরও বলেন, বৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে মানুষের জীবনও বদলে যায়। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে চলে যায়। নি:সঙ্গ জীবন কেমন সেটা কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।
একা থাকতে-থাকতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একজন ডাক্তার এ কাজ শুরু করেন। সেখানে মানুষের নি:সঙ্গতা যেভাবে বেড়ে যাচ্ছিল তাতে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
চিকিৎসক হেলেন কিংস্টন বলেন, আপনি যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যান এবং কারও সঙ্গে আপনার যোগাযোগ না থাকে তখন আপনি নিজেকেও ঠিক রাখতে পারবেন না।
২০১৩ সালে চিকিৎসক হেলেন চিন্তা করেন কীভাবে বৃদ্ধ মানুষদের নিঃসঙ্গতা দূর করা যায়। নিঃসঙ্গ মানুষদের চাহিদা নিরূপণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
হেলথ সেন্টারে নি:সঙ্গ বৃদ্ধদের জন্য একটি কক্ষ রাখা হয়েছে। সেখানে সবাইকে একত্রিত করে প্রতিদিন নানা ধরনের কর্মকাণ্ড করানো হয়। এতে তাদের সময় কাটে এবং পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে।
শুধু তাই নয়। চিকিৎসক হেলেন বলছেন, তারা একটি একটি কমিউনিটি গড়ে তুলেছেন যেখানে প্রায় ৫০০ মানুষ আছে, যারা বৃদ্ধদের সময় দেন।
প্রত্যেকে প্রতি বছর ২০ জন বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলেন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১০ হাজার বৃদ্ধকে পুরো বছরে সময় দেওয়া যায়।
বৃদ্ধা সু বলছেন, একদিন আমকে ফোন করে বলা হলো একজন আমাকে দেখতে আসবে। আমার যে কী আনন্দ হয়েছিল বলে বোঝাতে পারবো না।
এর পর থেকে কেউ না কেউ নিয়মিত বৃদ্ধা সু`র বাসায় আসতে থাকে এবং তাঁর খোঁজ-খবর নেয়। তখন থেকে সু শারীরিকভাবেও সুস্থ হয়ে উঠেন।
সূত্র: বিবিসি
একে//এসি