ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দেশে পৌঁছবে ২৩ এপ্রিল
প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার
জাতীয় গ্রিডে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। আগামী ২৩ এপ্রিল ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনালটি দেশে এসে পৌঁছবে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি এই ভাসমান টার্মিনালটি স্থাপন করবে কক্সবাজারের মহেশখালীতে।
মহেশখালীর টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণের কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এক্সিলারেটর এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইইবিএল) মাধ্যমে বাস্তবায়িত ভাসমান টার্মিনাল থেকে এই গ্যাস গরম করে প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তরিত করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে।
এলএনজি আমদানির জন্য ইতিমধ্যে কাতারের সঙ্গে চুক্তি সম্পূর্ণ হয়েছে। এছাড়া ওমান, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।
এক্সিলারেট এনার্জি ছাড়াও দেশিয় কোম্পানি সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে চলতি বছরের মধ্যে আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। এছাড়া কুতুবদিয়া ও পায়রাতে আরও এক বা একাধিক স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জাতীয় গ্রিডে এলএনজি যুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেট্রোবাংলার আওতাধীন গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মধ্যে তিতাস, কর্ণফুলী, বাখরাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ২ হাজার ৩৯০টি নতুন শিল্প-কারখানায় নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। সরকার ধাপে ধাপে আগামী মে মাস থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে অনুমোদিত এই ২ হাজার ৩৯০টি শিল্প-কারখানায় নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেবে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হলে দেশে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং জিডিপি বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন এবং মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় দেশের শিল্পায়ন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ সব ক্ষেত্রে এ গ্যাস সরবরাহ নতুন মাত্রা যোগ করবে।
তিনি আরও বলেন, এলএনজি আমদানি ও টার্মিনাল স্থাপনে জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে অর্থসংস্থানে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। টার্মিনাল স্থাপনের কাজও এগিয়ে চলেছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি থেকে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত এলএনজির প্রথম চালান দেশে আসবে এপ্রিলে। এ ধাপে ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আনা হবে। এছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৫০০ এমএমসিএফডি ধারণক্ষমতার দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বা ফ্লোটিং স্টোরেজ রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) স্থাপন করা হচ্ছে। এর একটি স্থাপন করবে এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড (ইইবিএল) ও অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি (প্রাইভেট)। টার্মিনাল স্থাপন ও ব্যবহার নিয়ে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে আলাদা চুক্তি করেছে পেট্রোবাংলার। এছাড়া এলএনজি আমদানিতে কাতারের রাশগ্যাস কোম্পানি এবং সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক গ্যাস সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রায় গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। শীতলীকরণ (রেফ্রিজারেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে মাইনাস ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনলে তা তরলে পরিণত হয়। এই তরল প্রাকৃতিক গ্যাসকেই বলা হয় এলএনজি।
একে//এসি