ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বৈশাখী শাড়ি-পাঞ্জাবি বিক্রির ধুম

প্রকাশিত : ০৫:৫৩ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:১০ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার

‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ রবীন্দ্রনাথের মতো দীপ্ত পায়ে হেঁটে আবারও এসেছে বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। চৈত্রের রোদের পর বৈশাখী উদ্দীপনায় শুরু হতে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। তাই পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিতে বাঙ্গালিও সাজছে নবরূপে। কেউবা লাল-শাড়িতে, কেউবা হলুদ পাঞ্চাবিতে, কেউবা অ-অা বর্ণমালা খচিত জামায় হাজির করবেন নিজেকে। 

এরইমধ্যে গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই বৈশাখী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বৈশাবি, বিঝু অনুষ্ঠান। এত জন-জীবনেও যেন নতুন মাত্রা যোগ করছে। পহেলা বৈশাখের নানা অনুষঙ্গের মধ্যে নতুন পোশাকের প্রতি তরুণ-তরুণীদের রয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। লাল-সাদা কাপড়ের ওপর গ্রামীণ বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা পোশাক পরিধানেই বর্ষবরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বাঙালিরা। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

ক্রেতাদের আগ্রহের কথা চিন্তা করে এবারও পহেলা বৈশাখের পোশাকে লাল-সাদাকে প্রাধান্য দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নারীদের জন্য রয়েছে ব্লক,অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি নকশা করা লাল-সাদা শাড়ির পাশাপাশি কামিজ, টপস, ফতুয়া ও টু-পিস। ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। শিশুদের জন্য পাঞ্জাবি, ফতুয়া, গেঞ্জি সেট তো আছেই। এসব পোশাকের ওপর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শীতল পাটি, প্রাচীন স্থাপনা, কাঁথাফোঁড়, পাখিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র।

বাহারি এসব পোশাক কিনতে সপ্তাহখানেক ধরে রাজধানীর মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন উৎসবপ্রেমীরা । ফলে মার্কেটগুলোতে বৈশাখ কেন্দ্রীক কেনা-কাটা বেশ জমেছে। কোনো কোনো স্টলে সকাল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত বিক্রয়কর্মীরা। তবে সব মার্কেটের বিক্রি পরিস্থিতি এক রকম নয়। বৈশাখের পোশাক বিক্রিতে এগিয়ে নিউ মার্কেট ও শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট।

এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, আগে বৈশাখের পোশাক বলতে শাড়ি ও পাঞ্জাবিকে বোঝানো হতো। কিন্তু এখন সেই চিন্তাধারার পরিবর্তন এসেছে। শাড়ি-পাঞ্জাবির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পোশাক কিনছেন। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ফ্যাশন হাউজগুলোও পোশাকে বৈচিত্র্য এনেছে।

কামিজ, টপস, ট্যাংকটপ,পালাজো, শার্ট, জিন্স, টি-শার্টসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সমাহার ঘটিয়েছেন বিক্রেতারা। এপ্রিলের শুরু থেকে এসব পোশাক দোকানে দোকানে প্রদর্শিত হচ্ছে।

আজিজ সুপার মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, পহেলা বৈশাখে আমাদের বিক্রি বেশ ভালো হয়। বৈশাখের বাহারি পোশাকের প্রতি তরুণীদের আগ্রহ বেশি দেখা যায়। এই কারণে আমাদের কালেকশনের ক্ষেত্রেও তরুণী ও শিশুদের পোশাক প্রাধান্য দিয়ে থাকি।

বিক্রয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী বলেন, বিক্রি মোটামুটি ভালো। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে কামিজ, দাম ৯০০-১৮০০ টাকা। আর ছোটদের ফুতয়া ও গেঞ্জিসেট ৪০০-৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

নিউ মার্কেটের শাড়ি বিক্রেতা কামাল উদ্দিন বলেন, `লাল-সাদা শাড়ির চাহিদা বেশি। পাশাপাশি হলুদ, ক্রিম কালারসহ বাহারি রঙের কালেকশন রয়েছে। তবে ক্রেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে লাল-সাদা শাড়ির প্রাধান্যই বেশি। এসব শাড়ি দেড় হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহে ভালোই বিক্রি হয়েছে। প্রত্যাশা ছিল চলতি সপ্তাহে আরও ভালো বিক্রি হবে। কিন্তু গত সপ্তাহের তুলনায় এখন বিক্রি কিছুটা কম। গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায়, এবার বিক্রি ভালো না, আবার খারাপও না।


কেআই/ এমজে