ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

‘কারুশিল্পের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প’

প্রকাশিত : ১১:০০ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে শিল্প পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে শিল্প পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা জিপিডিতে শিল্প খাতের অবদান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৪০ শতাংশে পৌঁছাবে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পাশাপাশি দেশের হস্ত ও কারুশিল্পের বিকাশ জরুরি। তাই এ খাতে উন্নয়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে গতকাল শনিবার বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে বিসিক ও বাংলা একাডেমী যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বৈশাখী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হক ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

শিল্পমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করার জন্য দ্রুত শিল্পায়নের মাধ্যমে ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। আনন্দের বিষয় সম্প্রতি জাতিসংঘ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে বিসিকে কর্মরত দক্ষ জনবলকে তাদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে।

বিশেষ অতিথি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তার বক্তব্যে বলেন, বাঙালির আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে বাংলা নববর্ষ সুদীর্ঘকাল থেকে এক বিশাল স্থান দখল করে আছে। মেলা আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক। মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আর্থ-সাজাজিক ও সাংস্কৃতির নানাদিক। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা বাংলা নববর্ষ উদযাপননের অন্যতম আকর্ষণ। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও বাংলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে বৈখাখী মেলা ১৪২৫-এর আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।

সংস্কৃতি সচিব তার বক্তব্যে বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে বাঙালি সাংস্কৃতির ঐতিহ্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্ষবরণের এ উৎসব ইতোমধ্যে বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, শিল্পায়নসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এরই ফলে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-এর দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশে শিল্পায়নের মাধ্যমে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সক্ষম হবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক তার বক্তব্যে বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বিকাশমান সাংস্কৃতিক অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে শিল্প বিকাশের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।

মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হস্ত, কারুশিল্পী ও উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর প্রায় ২০০টি স্টল স্থান পেয়েছে। এ মেলায় ১০টি স্টলে কারুশিল্পীরা তাদের বিভিন্ন পণ্য মেলার মাঠে তৈরি করে তা প্রদর্শন ও বিক্রি করছেন। মেলা উপলক্ষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতসহ অন্যান্য গান পরিবেশিত হবে।

আগামী ১০ বৈশাখ (২৩ এপ্রিল ২০১৮) পর্যন্ত মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত থাকবে।

এসএইচ/