চার মেয়র প্রার্থীর যতো মিল
আলী আদনান
প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৬:৫০ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার
আগামী ১৫মে হতে যাচ্ছে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে উভয় সিটি কর্পোরেশনে মোট ১২ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে গাজীপুরে সাত জন ও খুলনায় পাঁচ জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন।
প্রার্থিতা যতোই থাকুক না কেন, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে, সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাসই পাওয়া গেছে। তাদের যুক্তি এটি যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন, তাই ব্যাক্তি ইমেজের চেয়ে প্রতীকই প্রাধান্য পাবে। সেক্ষেত্রে দুই সিটিতেই প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
গাজীপুর ও খুলনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যথাক্রমে মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তালুকদার আবদুল খালেক। অন্যদিকে হাসান উদ্দিন সরকার ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু যথাক্রমে গাজীপুর ও খুলনায় বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে লড়ছেন।
এ চারজনের মধ্যে বয়সে সবচেয়ে তরুণ গাজীপুরের জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ছাড়া বাকি সবার চার দশকেরও বেশি সময়কার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তালুকদার খালেক, নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও হাসান সরকারের একাধিককার জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ রয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম সংসদ নির্বাচন না করলেও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই দিক থেকেই চার প্রার্থীরই জনপ্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ হয়েছে।
চার প্রার্থীর মধ্যে আরেকটি বড় মিল হলো তারা চারজনই তৃণমূলে যথেষ্ট জনপ্রিয়। স্থানীয় রাজনীতিতে তাদের অবস্থান জোরালো। চারজনেরই রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। দলীয় ভোটের বাইরেও চারজনেরই রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেক দলে-দলের বাইরে সর্বজন গ্রহণযোগ্য। তার প্রতিদ্বন্দ্বি নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনা বিএনপির রাজনীতিতে অনেকটা ‘বটবৃক্ষের’ মতো। অন্যদিকে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের রয়েছে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার সমর্থকদের দাবি জাহাঙ্গীরের কাছে কেউ কোনো কাজে গেলে খালি হাতে ফেরেন না। আর হাসান সরকারের রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি এলাকায় দুই ডজনেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
তালুকদার আবদুল খালেক ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু দুজনেই প্রথমদিকে নির্বাচনে অনাগ্রহী হলেও শেষে দলীয় বিবেচনায় মনোনয়ন নিতে আগ্রহী হন। এটা এই দু`জনের ক্ষেত্রে বড় মিল।
পক্ষান্তরে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিবেচনায় রেখেছে। যেমন: গাজীপুরে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপি হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। নয়তো জনপ্রিয় অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী এমএ মান্নান-ই মনোনয়ন পেতেন এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের এক নেতা। একইভাবে খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেক মনোনয়ন পাওয়ায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু মনোনয়ন পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে। নয়তো মণিরুজ্জামান মনি মনোনয়ন পেতেন বলে জানা গেছে।
একুশে টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপকালে চারজন মেয়র প্রার্থী একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন। সেটি হলো- নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারা ফলাফল মেনে নেবেন ও বিজয়ী প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাবেন। চারজন প্রার্থীর আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো- চারজনই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। তারা প্রত্যেকে স্বীকার করেছেন, অপর পক্ষকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
/ এআর /