সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদী আওয়ামী লীগ, বিএনপিতে শঙ্কা
আলী আদনান
প্রকাশিত : ০৫:৫০ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৬:০৮ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার
গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ যতোই ঘনিয়ে আসছে, দুই রাজনৈতিক দলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে ততোই বাড়ছে ব্যস্ততা। শুধু প্রার্থী বা তাদের কর্মীরা-ই নয়, বরং উভয় এলাকায় আওয়ামী লীগ- বিএনপি`র সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে নির্বাচনী উত্তেজনা।
স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও নির্বাচনের মূল আকর্ষণ দুই সিটির মেয়র পদকে কেন্দ্র করে। গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যথাক্রমে সাত জন ও পাঁচ জন করে মোট ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে অন্য সকল নির্বাচনের মতো দুই সিটিতেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হতে যাচ্ছে।
গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যথাক্রমে জাহাঙ্গীর আলম ও তালুকদার আবদুল খালেক। তারা দু`জনেই নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ সরকারের আমলে প্রত্যেকটি নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। ইনশাল্লাহ এ নির্বাচনও সুষ্ঠ হবে।
তবে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। শাসক দল প্রশাসনকে নানা ধরণের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাড়তি সুবিধা নেবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির এ প্রার্থী।
হাসান উদ্দিন সরকারের এমন আশঙ্কাকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, গাজীপুরে গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তখনো কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। সেই নির্বাচনেও তারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এখন ফের এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে মূলত বিএনপি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে চাচ্ছে।
একই বক্তব্যে বিশ্বাস করেন খুলনা সিটিকর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে তিনি বলেন, জীবনে কাউন্সিলর থেকে সংসদ সদস্য হয়েছি। মেয়র হয়েছি। এখন আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। আমি বিশ্বাস করি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এদিকে তালুকদার আবদুল খালেক সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও, একই সিটির বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ লক্ষ করছি না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে আমাদের কর্মীদের উপর অযথা ধরপাকড় করা হবে, হয়রারি হবে, মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হবে এবং জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হবে। তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হলো কই? শুধু কেন্দ্র দখল করলেই নির্বাচন জালিয়াতি হয়না। আরো অনেকভাবে নির্বাচনে প্রভাব ফেলা যায়।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর এমন আশঙ্কার জবাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি হেরে গিয়েছি। তখনো কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। নির্বাচন যদি সুষ্ঠ না হয় তাহলে বিএনপি প্রার্থী জিতল কীভাবে?
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়ার ব্যপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আর যদি কোথাও কোনো অনিয়ম দেখেন, তাহলে মিডিয়া আছে, পর্যবেক্ষক টিম আছে, সর্বোপরি দেশবাসী আছে। এদিকে সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি`র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, সরকার যদি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরণের পায়তারি করার চেষ্টা করেন, তাহলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।
এমজে/