ভারতের প্রধান বিচারপতির অভিসংশন নোটিশ খারিজ
প্রকাশিত : ০৩:২২ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৩:৩৩ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার
আচরণবিধি ভঙ্গসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে আনা অভিসংশন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার চেয়াম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। গত শুক্রবার দেশটির বিরোধীদল কংগ্রেসসহ ৭টি রাজনৈতিক দল এ আবেদন জানায়।
৭১ জন বিরোধী সাংসদের আনা ইমপিচমেন্ট নোটিশ জমা পড়ার পরই আইনি পরামর্শ নিতে শুরু করেন বেঙ্কাইয়া। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল ছাড়াও উপরাষ্ট্রপতি আলোচনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডি, লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল সুভাষ কাশ্যপ, প্রাক্তন আইন সচিব পি কে মলহোত্রা, প্রাক্তন সংসদীয় সচিব সঞ্জয় সিংহ এবং রাজ্যসভার সচিবালয়ের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, নোটিস খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে তারা। দলের তরফ থেকে অভিষেক মনু সিংভির প্রতিক্রিয়া, “প্রত্যাশিত ভাবেই শ্রী নায়ডু ইমপিচমেন্ট মোশন খারিজ করেছেন। তাই আমরা শিগগিরই উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হবো’।
এদিকে কংগ্রেসের মুখপাত্র সুরজেওয়াল বলেন, ‘রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এ নোটিশ খারিজ করে দিতে পারেন না। সংবিধান মতে ৫০ জন সাংসদ প্রধান বিচারপতির অভিসংশনের আবেদন জানালে, তা খারিজ করার কোনো এখতিয়ার রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের নেই। আর এর মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রত্যাখ্যান ও গণতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য যুদ্ধ বাস্তবে রূপ নিল’।
প্রধান বিচারপতির অভিসংশন প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির সংসদ সদস্য সুবরামা। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দুদিনও ভাবার দরকার নেই। কংগ্রেস অভিসংশন প্রক্রিয়ার বিষয়টি সংসদে আনায়, তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে’। এদিকে ভারতের কট্টরপন্থী গোষ্ঠী শিবসেনাও উপরাষ্ট্রপতির এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
এরআগে গত ১২ জানুয়ারি প্রধানবিচারপতির স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি রঞ্জন গগই, বিচারপতি মদন বি লকুর এবং বিচারপতি কুরিয়ান যোশেফ। সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি তার ব্যক্তিগত মর্জিমাফিক বিভিন্ন বেঞ্চে মামলা পাঠাচ্ছেন। এটি আদালতের নিয়মকানুনের চরম লংঘন, যা দেশটির গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলে দিবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এরপরই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলো একাট্টা হয়। এতে যোগ দেয় শিবসেনাসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী। সর্বশেষ গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর অভিসংশন চেয়ে রাজ্যসভায় ৭০ সাংসদ একটি অভিসংশন নোটিশ আনেন। তবে নোটিশ আনার মাত্র তিন দিনের মধ্যেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তা খারিজ করে দেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমজে/