১০ বছর ধরে ছেলে সেজে আছে সিতারা
প্রকাশিত : ০৪:৪৩ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:৫৩ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার
মেয়ে হয়েও ছেলের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছেন ১৮ বছর বয়সী এক আফগান কিশোরী। তার নাম সিতারা ওয়াফাদার। অন্য মেয়েদের মতো লম্বা চুল রাখার স্বপ্ন দেখে সিতারা। পরতে চায় মেয়েদের স্বাভাবিক পোশাক। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় ধরে সিতারার বাবা-মা তাঁকে ছেলের বেশ ধরতে বাধ্য করছেন। কারণ তাদের কোনও পুত্রসন্তান নেই।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে নাঙ্গারহার প্রদেশে একটি গ্রামের দরিদ্র পরিবারে বসবাস করেন সিতারা ওয়াফাদার। ছেলেদের মতো ছোট চুল আর পোশাকে ছেলের ছদ্মবেশ নিয়ে চলেন তিনি। বাবা-মার ইচ্ছাপূরণেই এ বেশেই শৈশব-কৈশোরের বিশাল একটা সময় পার করেছে সে।
প্রতিদিন সকালে শার্ট ও প্যান্ট পরিধান করে কাজে বের হন সিতারা৷ সে ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে৷ প্রতিদিন সকালে নিজের ‘মেয়ে’পরিচয় গোপন করে ছেলে সেজে কাজে বের হয়৷ দশ বছর ধরে ছেলে সেজে থাকতে থাকতে এখন নিজের অস্তিত্বকেই ভুলতে বসেছে সে৷
সিতারারা পাঁচ বোন। বাড়িতে মেয়ে আর বাইরে ছেলে এমন দ্বৈত ভূমিকার জন্য তিনি ‘বাছা পোশি’ হিসেবে পরিচিত। অবশ্য ছেলের ছদ্মবেশ ধরায় পিতৃতান্ত্রিক দেশটিতে তিনি নিরাপদে সব কাজ করতে পারেন।
সিতারার বাবা এএফপিকে বলেছেন, আজ আমার ছেলে থাকলে বড় মেয়েকে দিয়ে এভাবে কাজ করাতাম না৷ সিতারার কাঁধে অনেক দায়িত্ব৷ পরিবারের ঋণ শোধ করতে হবে৷
উল্লেখ্য, রক্ষণশীল আফগানিস্তানে সিতারার এই দ্বৈত চরিত্রের পেছনে গভীর বেদনার ইতিহাস রয়েছে। দেশটিতে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের কদর বেশি। তাই নারীদের বেশির ভাগ সময় নিজ বাড়ির গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়। বাবা ছাড়া তাদের পরিবারের কোনও পুরুষ মানুষ নেই। বাইরের সমাজে মেয়েদের পদে পদে সমস্যা সৃষ্টি হয়, যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু ছেলে হলে আর এসব সমস্যা স্পর্শ করতে পারে না। মূলত মেয়েদের জটিলতা এড়াতে এবং দরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতেই তার এই ছদ্মবেশী জীবনযুদ্ধ। অবশ্য দেশটিতে যেসব নারী দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হন, তারা ছেলেদের মতো স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারেন।
সূত্র: এনডিটিভি
একে//