নবীন ব্যাংকারদের ২০ ভাগই এখন নারী
প্রকাশিত : ১০:১২ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার
দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে কমছে নারী-পুরুষের ব্যবধান। ব্যাংকগুলোতে চাকরির পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদেও বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। বর্ধমান এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে এখন নবীন কর্মকর্তাদের ২০ শতাংশের বেশি নারী। কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদেও আছে প্রায় ১৪ শতাংশ নারী। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিসেম্বরভিত্তিক লিঙ্গসমতা বিষয়ক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের কম বয়সী যেসব কর্মী রয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এ হার ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। মোট কর্মরতদের মধ্যে সূচনা পর্যায়ে নারী কর্মী রয়েছেন ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে আছেন ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ব্যাংকের মতো ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট পরিচালকের মধ্যে ১৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ এখন নারী। আর ৩০ বছরের কম বয়সী কর্মকর্তাদের মধ্যে নারী আছেন ২৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ নারী। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। এসব প্রতিষ্ঠানের সূচনা পর্যায়ে নারী কর্মীর সংখ্যা ১৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট পরিচালকদের ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী পরিচালক রয়েছেন রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকের পরিচালকদের ২০ শতাংশ নারী। তবে সরকারি বিশেষায়িত দুই ব্যাংকে কোনো নারী পরিচালক নেই। বিদেশি ব্যাংকে এ হার ১৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকে ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
এবিষয়ে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী আলাউদ্দিন এ মজিদ বলেন, চাকরিক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারী কর্মীদের আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন থাকে। বেশিরভাগ নারী সংসার ও অফিস দুটিই সামলানোর চেষ্টা করেন। তারা শুধু ক্যারিয়ারের দিকে খেয়াল না করে চাকরিতে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার বিষয়টি বেশি অগ্রাধিকার দেন। যে কারণে সামগ্রিকভাবে চাকরি বদলের সংখ্যা তাদের কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) ‘র ২০১৪ সাল শেষে দেওয়া জরিপে দেখা গেছে, ২০১০ সালের পর থেকে ব্যাংকে নারীর অংশ বাড়ছে। ২০১৪ সাল শেষে ব্যাংক খাতে জনবল ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৫০ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ জন অর্থাৎ ৮৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ পুরুষ। নারী ব্যাংকের সংখ্যা ২০ হাজার ৫৫৪ জন, যা মোট জনবলের ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ২০১০ সালে ব্যাংক খাতে মোট জনবল ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৯ জন। তার মধ্যে নারী কর্মী ছিল ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১০ সালের পর থেকে ব্যাংকে নারী ব্যাংকারের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ২০১১ সালে ব্যাংক খাতে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২১০ জন জনবলের মধ্যে নারী ছিল ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ। ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতে প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে জনবল বাড়ছে। নারী বাড়ার হার এর চেয়ে বেশি। তবে ব্যাংক খাত এখনো পুরুষ নিয়ন্ত্রিত খাত। বর্তমানে দেশে ৫৬টি তফসিলি ব্যাংক কাজ করছে।
আরকে//এসি