ভারতে ৪০ লাখ ভক্তের ধর্মগুরু ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত
প্রকাশিত : ১২:২৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১২:২৯ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ বুধবার
ভারতে রামগুরুর পর এবার ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আলোচিত ধর্মগুরু আসারাম বাপু। বিশ্বে তার ৪০০ এর বেশি আশ্রম রয়েছে, যেখানে তিনি মেডিটেশান ও যোগ ব্যয়াম শিক্ষা দিয়ে থাকেন। ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন লাখ লাখ শিষ্যের এ গুরু।
বুধবার জোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক মধুসুদন শর্মা এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসারামের দুই সহযোগীও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। খালাস পেয়েছেন দুজন। রায় ঘোষণার পর পর আসারামের আশ্রমের মুখপাত্র নীলম দুবে জানিয়েছেন, আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করবেন।
এদিকে আসারাম বাপুর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা রাজ্যে কড়া সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আসারামের ভক্তরা যাতে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সহিংসতা না করতে পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জোধপুরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহরে সব বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হোটেল ও ধর্মশালায় যাতায়াতকারীদের ওপরও নজর রাখছে পুলিশ। জোধপুর শহরের বাইরে পল রোডে আসারামের আশ্রমকে এরই মধ্যে খালি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন আসারাম বাপু। ওই সময় বাপুর এক ভক্তের মেয়ের উপর ভৌতিক আশ্রয় আছে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আসারাম বাপু তাকে তার আশ্রমে ডেকে আনেন। ওই ভক্তের মেয়ে বাপুর ঘেরায় প্রবেশ করলেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি তার বাবা-মাকে। এরপর ধর্ষণ করা হয় ওই মেয়েকে। ধর্ষণের পর কাউকে ঘটনা না বলতে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে হত্যার হুমকি দেন ওই গুরু।
আসারাম বাপু ১৯৪১ সালে পাকিস্তানের সিন্ধে জন্মগ্রহণ করেন। তবে দেশভাগের পর তিনি গুজরাটে স্থানান্তর হন। অনেক ধর্মগুরুর কাছ থেকে শিক্ষা লাভের পর ১৯৭২ সালে প্রথম আশ্রম খোলেন আসারাম বাপু। এরপর বিশ্বজুড়ে তার ৪০০ এর বেশি আশ্রম খোলেন বিতর্কিত এ ধর্মগুরু। বিশ্বজুড়ে তার ৪০ লাখ ভক্ত আছে। তার আশ্রমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ দেশটির অনেক বড় বড় রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও অভিনেতার যাতায়াত ছিল।
জানা গেছে, আরও একটি ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিচারকার্য চলমান রয়েছে। অন্যদিকে দেশটিতে তার অঢেল সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তির উৎস ও দুর্নীতির সন্ধ্যানে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এমজে/