ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

৭ উপদেশ মেনে চললে ক্যারিয়ারে সাফল্য আসবেই

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

আমরা সবাই সফল ক্যারিয়ার গড়তে চাই। সবাই যে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারে তা কিন্তু নয়। তাহলে সফল এবং ব্যর্থ এই দুই শ্রেণীর মধ্যে মূল পার্থক্যটা কোথায়? ভারতের মোটিভেশনাল স্পিকার বা অনুপ্রেরণামূলক বক্তা সিদ্ধার্থ ৭টি উপায় বলে দিয়েছেন যা মেনে চললে ক্যারিয়ারে সফলতা ধরা দেবেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত তাঁর উপদেশগুলো ভাষান্তর করে তুল ধরা হলো-

১) লক্ষ্য স্থির করুণ এখনই

আগামীকাল কী কী কাজ করবেন বা করা দরকার তা আজকেই নির্ধারণ করে রাখুন। শুধু নির্ধারণই না; সেগুলোকে নোটবুকে লিখে রাখুন। আর পরের দিন কাজগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করুণ। কোনো কাজ হয়ে গেলে কাজটির তালিকার পাশে টিক চিহ্ন দিন। এভাবে করে প্রতিটি কাজ শেষ করুন।

দিন শেষে আপনি নোটবুকে নজর দিলে যখন দেখবেন যে আপনি সব কাজ শেষ করতে পেরেছেন তখন নিজের কাছেই খুব ভালো লাগবে। এক ধরণের আত্মবিশ্বাস অনুভব করবেন। শুরুতে শুরুতে হয়তো সবগুলো কাজ শেষ করতে পারবেন না। যেগুলো শেষ করতে পারেননি সেগুলো কেন শেষ করতে পারেননি তাও লিখে রাখুন। আর সেই কারণ থেকে সমাধান বের করুন।

২) কাজ করুন মন দিয়ে

যে কাজই আপনি করুন না কেন তাতে মনযোগ দিন। যে বিষয়গুলো আপনার মনযোগে বিঘ্ন ঘটায় যেমন মুঠোফোন, ইন্টারনেট এধরনের বস্তু থেকে সেসময় দূরে থাকুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে মুঠোফোন ব্যবহার করা আমাদের অনেকেরই অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এটি আমাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ডে ধীরগতি এনে দেয়। প্রয়োজনে কাজের কিছু সময় মোবাইল সাইলেন্ট রাখুন অথবা মোবাইলের ডাটা কানেকশন বন্ধ রাখেন।

৩) একসঙ্গে অনেক কাজ নয়

আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন যে, একসঙ্গে কয়েকগুলো কাজ করতে পারলেই বুঝি দক্ষ হওয়া যায়। বিষয়টি একটি কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না। আমাদের মস্তিষ্ক শুধু একটি মাত্র কাজের দিকে জোর দিতে পারে। অনেকগুলো কাজ একসাথে করতে গেলে সফলভাবে শেষ করার চেয়ে গুলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই একটি কাজ শুরু করলে সেটি শেষ করে তারপর অন্য কাজ করুন।

৪) মানসিক এবং আবেগীয়ভাবে সুস্থ থাকুন

যখন আপনি কোন কাজ স্বাচ্ছন্দে করবেন তখন কাজটিতে আপনি ভালো করবেন। তাই কর্মক্ষেত্রে ভালো করতে হলে আপনি সেই কাজটিই করুন যা করতে আপনি ভালবাসেন। আর যদি তা করতে না পারেন তাহলে যে কাজটি আপনার করতে হবে তাকেই ভালবেসে করুন।

আপনি যদি একজন চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে অপছন্দের কোনো কাজও যদি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আপনাকে করতে বলেন আর সেই কাজটি যদি না করে কোন উপায় না থাকে তাহলে একটি হাসি দিয়ে কাজটি করে ফেলুন। যে আপনাকে বেতন দিচ্ছেন তাঁর সঙ্গে বেশি তর্কে জড়াবেন না। তাদেরকে শান্তভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি না পারেন তাহলে নিজেকে বদলান। যদি সেটিও না পারেন তাহলে চাকরি বদলান। তবুও ঝগড়াঝাটি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। নির্ঝঞ্ঝাট থাকতে পারলে তা আপনাকে মানসিক এবং আবেগের দিক থেকেও সুস্থ রাখবে।

৫) টানা কাজ নয়

দিনটি আপনি কতটা নিয়ন্ত্রিতভাবে শেষ করছেন তাঁর ওপর নির্ভর করে আপনার কর্মদক্ষতা। আর এর জন্য আপনাকে থাকতে হবে শারীরিকভাবে সুস্থ। দিনে অন্তত ১ঘন্টা শারীরিক ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। কাজের চাপে না খেয়ে থাকাটা কর্মক্ষেত্রে আপনাকে শক্তি যোগাবে না। তাই পানি ও খাবার গ্রহণে অনিয়ম করা যাবে না।

এছাড়া কোথাও টানা ১ ঘন্টার বেশি সময় বসে থাকবেন না। এক ঘন্টা পর পর প্রয়োজনে অফিসের মধ্যেই খানিকটা পায়চারি করে নিন। পরবর্তী সময়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে কিছুটা সময় নিন।

৬) সহকর্মীদের মাঝে কিছু কাজ ভাগ করে দিন

সহকর্মীদের মাঝে যদি কাজ ভাগ করে দিতে না পারেন তাহলে আপনার দক্ষতা প্রকাশ পাবে না। এই গুণটি আপনার মধ্যে না থাকলে বুঝে নিন যে, সব কাজ আপনাকেই করতে হবে। প্রথম দিকে বিষয়টি আপনার অধ:স্তন কর্মীদের দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনার অধীনে থাকা কোন কর্মী যে কাজটি করতে পারে তাকে সেটি করতে দিন। আপনি তাঁর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ করুন।

তবে এর মানে এই না যে, সব কাজ আপনি অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেবেন। অন্যদের দেওয়া কাজের থেকে বড় পরিসরের কাজ আপনি করুন। এটা দেখে আপনার দলের কর্মীরা অনুপ্রাণিতও হবে। জুনিয়রদের সঙ্গে এমন দৃষ্টান্ত রাখুন যে আপনি এখনও কাজ করেন।

৭) দক্ষতায় ঝালাই দিন

শিক্ষার যেমন শেষ নেই তেমনি দক্ষতারও শেষ নেই। আপনিই সবথেকে দক্ষ এমন দাম্ভিকতায় থাকার কোন মানে হয় না এই যুগে। আপনি খুবই দক্ষ হলেও সেই দক্ষতায় ধাঁর দিন। যে দক্ষতা নিয়ে আপনি অনেক পথ পাড়ি দিয়েছেন সময়ের বিবর্তনে সেই দক্ষতা কার্যকর নাও থাকতে পারে।

বাজারে চলমান বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নতুন করে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। অনলাইনে কোর্স করতে পারেন। করতে পারেন নিয়মিত ক্লাসও। এভাবে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন আর বাজারে তা বিক্রি করুন।

সূত্রঃ ইন্ডিয়ান টাইমস

//এস এইচ এস// এআর