ঢাকা, শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫,   পৌষ ২৭ ১৪৩১

‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে দরকার সচেতনতা’

প্রকাশিত : ০৭:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকার থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম পর্যন্ত সবারই সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। সমাজের সর্বস্তর  থেকে এ বাল্য বিবাহের ছোবল বন্ধে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. নাসরীন আহমাদ। এতে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম।

মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের দেশে শৈশব থেকেই ছেলে ও মেয়ে শিশুদের মধ্যে অযাচিত দুরত্ব সৃষ্টি করার একটা প্রবণতা রয়েছে, যা তাদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বিকাশে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সম্প্রতি প্রণীত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান প্রসঙ্গে সভা-সেমিনার হলেও জোরালো কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি, যা অনেকের কাছে বিষ্ময়কর বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সেমিনারে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে নারীদের আঠারো বছর বয়সের নীচে বিয়ের বৈধতা সম্পর্কিত বিশেষ বিধান প্রণয়নে নারীদের মতামত কতোটুকু গ্রহণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. নাসরীন আহমাদ। এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহের পক্ষে ও নারীদের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য অহরহ করা হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এসব সত্ত্বেও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ক্রমান্বয়ে সচেতন হচ্ছে, যা আমাদের মনে আশার সঞ্চার করে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশে টেকসই উন্নয়নে বাল্যবিবাহ অন্যতম অন্তরায়। বিশ্বে বাল্যবিবাহে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তবে পিকেএসএফ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ইতিমধ্যে এ সকল কার্যক্রমের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৫২ শতাংশ নারী বাল্যবিবাহের শিকার, যা সামাজিক বঞ্চণার নির্দেশক এবং উন্নয়নের অন্তরায়। পিকেএসএফ টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করেত নানামূখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যার মধ্যে অন্যতম লক্ষ্য হলো নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) গোলাম তৌহিদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. মহসিন আলী, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কর্মরত সহযোগী সংস্থাসমূহের নির্বাহী প্রধান, কিশোরী ক্লাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

আরকে//