ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বয়স ৩০ পেরোলে ডায়েটে রাখুন ৯ খাবার

প্রকাশিত : ০৭:৪১ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

শরীরের জ্বালানি হল খাবার। তাই তো সুস্থ থাকতে ঠিক মতো খাবার খাওয়াটা জরুরি। বিশেষত ৩০ বছরের পর শরীরের ভেতরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। এর প্রভাবে বেশ কিছু রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই তো এই সময় বেশি করে শরীরের খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর যদি এমনটা করতে না পারেন, তাহলে কিন্তু বিপদ!

এখন প্রশ্ন হল ৩০-এর পরে শরীরকে সুস্থ রাখতে কী কী নিয়ম মানতে হবে? তেমন কিছু না। এক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে খাওয়া চলবে না! বরং বেশি কিছু খাবারকে রোজের ডেয়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন ধরুন-

১. পনির

যারা শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার খান, তাদের জন্য পনির হল মাংসের সমান। অর্থাৎ এক বাটি মাংস খেলে শরীরে যে মাত্রায় পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়, সমপরিমাণ পনির খেলেও অনেকটা একই ঘটনা ঘটে। তাই যাদের মাছ-মাংস খেতে ভাল লাগে না। তারা ৩০ পেরনো মাত্র নিয়মিত অল্প পরিমাণে হলেও পনির খেতে ভুলবেন না যেন!

২. ইডলি

এটি বাস্তবিকই শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এতে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন, শরীরের গঠনে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। শুধু তাই নয়, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতেও ইডলির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো সপ্তাহে ১-২ দিন ব্রেকফাস্টে এই খাবারটি রাখতে ভুলবেন না যেন!

৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

শরীরের গঠনে এই উপদানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই বয়সে যেহেতু শরীরের গঠন দ্রত হারে হয়, তাই ৩০ বছর বয়সিদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- মাংস, ডিম, মাছ, দুধ, বাদাম, ওটস, দই প্রভৃতি বেশি করে খেতে হবে।

৪. ডাল

শরীরকে সচল রাখতে প্রতিদিন ভিটামিনের প্রয়োজন পরে। তাই তো রোজের ডায়েটে পছন্দের কোনও ডাল থাকা মাস্ট! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি ভিটামিনই মজুত থাকে, যেমন ধরুন ভিটামিন এ, বি, সি, ই প্রভৃতি। শুধু তাই নয়, ডালে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং পটাশিয়াম। এই উপদানগুলিও নানাভাবে শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে রক্ত শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট

শরীরকে চাঙ্গা রাখতে এটিও একটি অতি আবশ্যিক উপাদান। সাধারণত রাঙা আলু, ব্রাউন রাইস, সবুজ শাক-সবজি, হোল গ্রেন খাবার প্রভৃতিতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট প্রচুর মাত্রায় থাকে। আসলে কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে। এনার্জি ছাড়া যেহেতু আমাদের একদিনও চলবে না তাই প্রতিদিনের ডায়েটে এই জাতীয় কাবার থাকা মাস্ট!

৬. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার

৩০-এর গণ্ডি পেরতে চলেছেন যারা তাদের প্রতিদিনের ডায়েটে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, মাছ, জাম এবং ডিম থাকা জরুরি। কারণ এই সুপারফুডগুলি মস্তিষ্ক এবং শরীরকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এই বয়সে আরও একটি উপাদানের খুব প্রয়োজন পরে। তা হল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা জাম, ডার্ক চকোলেট, মটরশুটি প্রভৃতি খাবারে খুঁজে পাওয়া যায়।

৭. বাদাম

বয়সকালে অস্টিওপোরোসিস এবং আর্থ্রাইটিসের মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হতে না চাইলে বেশি করে এই ধরনের খাবার খেতে হবে। কারণ বাদাম এবং নানাবিধ বীজে বিপুল মাত্রায় ভিটামিন এবং খনিজ থাকে, যা এমন সব রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৮. ডিম

বিশেষজ্ঞদের মতে ৩০ পেরতে না পেরতেই আমাদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। এই হরমোনটি শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যারা ৩০ পেরিয়েছেন, তাদের এমন খাবার খেতে হবে যা শরীরে টেস্টোস্টেরণ হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে। প্রসঙ্গত, ডিম এবং মাছ শরীরে এই বিশেষ হরমোনটির মাত্রা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে যাতে ভিটামিন-ডি এবং ভাল ফ্যাটের ঘাটতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।

৯.ক্যালসিয়াম রিচ খাবার

ব্যাংকে টাকা জমালে যেমন বিপদে-আপদে কাজে লাগে। তেমনি কম বয়স থেকেই যদি শরীরের ব্যাংকে নানাবিধ খনিজকে সঞ্চয় করে রাখা যায়, তাহলে বয়সকালে শরীর সুস্থ থাকে। তাই তো যাদের বয়স ৩০-এর কোটায়, তাদের বেশি করে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরমার্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে//