সিএনএস বিশ্লেষণ
চীন থেকে উ. কোরিয়া কি দূরে সরে যাবে
প্রকাশিত : ০৮:১২ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার
দুই কোরিয়ার সীমান্তে বেসামরিক অঞ্চল পানমুনজুম গ্রামে আগামীকাল শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া বৈঠকের আয়োজনে চলছে জোর প্রস্তুতি। এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকের আগে দক্ষিণের প্রেসিডেন্টের মুন জায়ে ইনের যুক্তরাষ্ট্র সফরের জোর সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে গণমাধ্যমে।
সবমিলিয়ে উ. কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার পাশাপাশি দুই কোরিয়ার একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। তাই এ নিয়ে চাপে রয়েছে চীন। তাদের আশঙ্কা, এতদিনকার ঘনিষ্ঠ মিত্র থেকে দূরে সরে গিয়ে দীর্ঘদিনের শত্রু দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন কিম। এমনটা ঘটলে ভূরাজনৈতিক কৌশলের দিক দিয়েও বিশ্বে পিছিয়ে পড়তে পারে চীন।
শুধু তাই নয়, দুই কোরিয়া একত্রিত হওয়ার পথ সুগম হলে এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বলতে গেলে চীনের সীমান্তের কাছে চলে আসার সুযোগও সৃষ্টি হতে পারে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে মেনে নেবে। সেইসঙ্গে নিজেদের মিত্র হিসেবে পিয়ংইয়ংকে বিশ্বমঞ্চে দাঁড় করিয়ে দেবে। অন্তত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের স্বীকৃতি দিয়ে দেবে। এমন হলে এতদিন উত্তর কোরিয়া ও এর শীর্ষ নেতা কিমের ওপর চীন যে ছড়ি ঘোরাত, তার সুযোগ অনেক সীমিত হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে দুই কোরিয়া বন্ধুতে পরিণত হলে কোরিয়া অঞ্চলে চীনের প্রভাব খর্ব হবে এবং এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেইজিংয়ের বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়বে।
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চলছে পাল্টাপাল্টি বাণিজ্যযুদ্ধ। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের আধিপত্যের লড়াইয়ে উ. কোরিয়া মাঝখানে একটা বাফারিং জোন হিসেবে কাজ করেছে। এবার যেন সেই জোনটিই হারাতে বসেছে চীন।
সবমিলিয়ে আগামীকাল শুক্রবারের বৈঠকটি যে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর তাই এ বৈঠকে কী ঘটে, তার দিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও রাশিয়া।
একে//