ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

অফিসে কী রাজনৈতিক আলাপ করতে পারবেন?

প্রকাশিত : ০২:৪৯ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার

ব্যক্তি জীবনে আমাদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতামত থাকবে এটাই স্বাভাবিক তবে এ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে আলোচনা করবেন কী না অথবা কর্মক্ষেত্রে ওঠা কোন রাজনৈতিক আলোচনায় শরিক হবেন কী না সে বিষয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে এটা অনেকটা প্রতিষ্ঠিত নিয়ম যে, কর্মক্ষেত্রে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় আলাপ না করাই উত্তম কর্মক্ষেত্রে এসব বিষয়ের আলাপ অনেক সময় ব্যক্তিগত রেষারেষিতে পরিণত হয়

তবে মুখে বলা হলেও বাস্তবে রাজনৈতিক আলোচনা থেকে মনযোগ ফিরিয়ে নেওয়া খুব একটা সহজ কাজ না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে একটা কথা আছে যে, আপনার রাজনীতির ওপর আগ্রহ না থাকলেও রাজনীতির আপনার ওপর আগ্রহ আছে। তাই যারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন নন তারাও মাঝে মাঝে রাজনৈতিক আলাপে জড়িয়ে যান।

গবেষকরা যা বলেন

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় একটি গবেষণা করা হয়। ক্যারিয়ার বিল্ড নামের একটি সংস্থা ঐ গবেষণায় দেখে যে, প্রতি পাঁচ জনের অন্তত একজন কর্মক্ষেত্রে তাদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে সহকর্মীর সাথে ঝগড়া করেছেন। গবেষক দলের প্রধান মানব সম্পক কর্মকর্তা রোসমেরী হেফনার বলেন, `কর্মক্ষেত্রে এসব আলোচনা অপেশাদারি আচরণ। এসব আচরণ আপনাকে বৈষম্যের মুখেও ফেলতে পারে।’

কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের আচরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রিয়া ওয়ারিক বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে রাজনৈতিক আলাপ না করাই ভালো। তারপরেও যদি এমন আলাপে জড়িয়ে যান আর যদি দেখেন যে, আলোচনা উত্তপ্ত হয়ে উঠছে তাহলে সেখান থেকে বের হয়ে আসুন।’

ওয়ারিক আরো বলেন, ‘ভারতীয় উপমহাদেশেও সব জায়গায় রাজনৈতিক আলোচনা হয়। চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার অথবা বোর্ড মিটিং-এ রাজনৈতিক আলোচনা হতে দেখা যায়।’

আলোচনার কৌশল

কর্মক্ষেত্রে যদি রাজনৈতিক আলোচনা করতেই হয় তাহলে এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুণ।

১) নিরেপেক্ষতা  

নিরপেক্ষ থাকুন। রাজনৈতিক আলোচনার মানে এই নয় যে, আপনাকে কোন বিষয় প্রমাণ করতেই হবে। কোন পয়েন্টে জিতে আসার বদলে আপনি সবার সামনে একটি প্রেক্ষাপট রাখুন। এভাবে মুক্ত আলোচনা করুণ।

২) আগে বুঝুন

সহকর্মীদের সাথে রাজনৈতিক আলোচনায় জড়িয়ে যাওয়ার আগে তাদের নিজেদের কার কী মত সে বিষয়ে ধারণা নিন। বেফাস কিছু বলে ফেলার আগে অন্যদের কথার ওজন বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি যা বলতে চাচ্ছেন তা বললে অন্যদের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে তা অনুমান করে তবেই মুখ খুলুন।

৩) সুযোগের ব্যবহার করুন

আপনি কাউকে পরিবর্তন করতে পারবেন না। তাই সে চেষ্টা করে লাভও নেই। এর চেয়ে বরং মুক্ত আলোচনা থেকে জ্ঞান নিন। আর সেই জ্ঞান সুযোগ মতো ব্যবহার করুন।

৪) প্রশ্ন করুন

কোন বিষয়ে না জেনে অযথা তর্ক করবেন না। এর চেয়ে বরং প্রশ্ন করুন। উত্তর জানুন। এতে আপনার জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে।

৫) অন্যদের প্রতি সম্মান রাখুন

আমাদের মধ্যে একটা সমস্যা থাকে যে, আমরা সহজেই অন্যের বিচার করে ফেলি। আর নিজেদের সেই বিচার দিয়েই অন্যদের মূল্যায়ন করি। এমনটা না করে বরং খানিকটা কূটনৈতিক হন। শারীরিক ভাষায় নমনীয়তা বজায় রাখুন এবং শান্ত-স্থির থাকুন।

৬) একটি পক্ষ নিন

রাজনৈতিকভাবে আপনাকে একটি পক্ষের অনুসারি হতে হবে। অফিসের এক বস এক দলের সমর্থক বলে তার সামনে সেই দলের প্রশংসা করবেন আবার অন্য বস অন্য দলের সমর্থক হওয়ায় তার সামনে সেই দলের সমর্থন করবেন; এমনটা করা যাবে না। কারণ যেদিন আপনার এই দ্বৈত অবস্থান ধরা পরবে তখন একজন মানুষ হিসেবেও আপনি প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।

 সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া

//এস এইচ এস//