ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

অর্থায়ন যেন সন্ত্রাসী কাজে না যায়: গভর্নর

প্রকাশিত : ১১:২২ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে খুব বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির। তিনি বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে সজাগ থাকতে হবে যেন তাদের দূর্বলতার সুযোগে ভাল গ্রাহকের ছদ্মবেশে অপরাধীরা মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো অপরাধ করতে না পারে ।

আজ শুক্রবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)’র তত্ত্বাবধানে রাজেন্দ্রপুরে ব্র্যাক সিডিএমে দুদিন ব্যাপী “আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০১৮”র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার ব্যর্থতার কারণে অবৈধ পন্থায় ঋণ বা বিনিয়োগ তহবিলকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করায় সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থার অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য সব ক্ষেত্রে কর্পোরেট গভর্নেন্স নিশ্চিতকরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনায় বিএফআইইউ কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনাগুলোর  পরিপালন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে এরূপ ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখার উপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

বিএফআইইউ’র মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশনাল হেড জাকির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউ প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মহাব্যবস্থাপক  এ.কে.এ. আমজাদ হোসেন এবং বিএলএফসিএ’র চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বাংলাদেশে কার্যরত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও উপ প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তারা ছাড়াও ১৩ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের  প্রধান নির্বাহীরা  উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএফআইইউ’র উপ মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুব আলম। এছাড়াও প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাদের পক্ষে ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেড’র প্রধান পরিপালন কর্মকর্তা জাফর উল্ল্যাহ খান এবং বিএলএফসিএ’র পক্ষে এর চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও হেড অব বিএফআইইউ আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান  সংশ্লিষ্ট সব আইন-কানুন ও বিএফআইইউ কর্তৃক জারীকৃত সব নির্দেশনার যথাযথ পরিপালনের পাশাপাশি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি এবং প্রেক্ষিত বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন, ঝুঁকির সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যাপ্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাদি নিশ্চিতকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন অনুশীলন এবং সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট দাখিলকরণের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন।

এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি) ’র কো-চেয়ার হিসেবে সর্বসম্মতভাবে ২০১৮-২০২০ মেয়াদে বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান-কে সুযোগ্য নেতৃত্ব প্রদানের জন্য সবার পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি এ সম্মান ও স্বীকৃতি ধরে রাখার এবং দেশের আর্থিক খাতের টেকসই উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধতার আলোকে আইনী কাঠামো উন্নতিকরণের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত কার্যক্রম, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের রিপোর্টিং বিষয়ে জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ ও উক্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পরিপালনীয় বিষয়ে বিএফআইইউ কর্তৃক চিহ্নিত ঘাটতিসমূহ এবং বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে পরিলক্ষিত বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বনের জন্য তিনি পরামর্শ প্রদান করেন।

পরিশেষে, প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাদের প্রতি আয়োজিত সম্মেলনে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ সম্মেলনকে সাফল্যমন্ডিত করার আহ্বান জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

আরকে//টিকে