ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

কারা আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বে

আলী আদনান

প্রকাশিত : ০৫:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৫:৪৮ পিএম, ৭ মে ২০১৮ সোমবার

বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি মানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ছাত্ররাজনীতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একসূত্রে গাঁথা। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত দেশে ছাত্র সমাজের সকল আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার ছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেই সব আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

স্বাভাবিক ভাবেই এসব কিছু বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বের দিকে সবার দৃষ্টি থাকে। রাজনীতি সচেতন মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই জানতে চান কারা আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে।

সবার সেই আগ্রহ ধরে রেখেই আজ (২৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ সম্মেলন চলছিল। তবে সম্মেলনের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও আজ কমিটি ঘোষণা হচ্ছে না বা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই-এমন বিষয়ে একমত হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তবে তার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণা করার সম্ভাবনা খুব বেশি বলেও এমকত হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা। পুরো কমিটি না হলেও সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকসহ আংশিক কমিটি ঘোষণার ব্যাপারে দ্বিমত নেই কারো।

কেমন হতে পারে সেই কমিটি? কারা আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আগামী দিনের নেতৃত্বে। এমন জল্পনা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, বরং সারা দেশে ছাত্রলীগের নেতা কর্মী সহ অসংখ্য সমর্থক তাকিয়ে আছে সেদিকে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বে আসতে পারেন এমন এক জনের সাথে আলাপ কালে একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। ফলে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসার আলোচনায় আছেন তারাই আসতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের জন্য আলোচিত মুখ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জন্য আলোচিত মুখ ঘুরে ফিরে একই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিভিন্ন বিষয় মাথা রেখে নানা যোগ-বিয়োগে দু`জনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাধারণ নির্বাচিত করে অনেকটা একই মান বা যোগ্যতা সম্পন্ন বাকি দু`জনকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জন্য নির্বাচিত করেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অন্য এক নেতার দাবি অনুযায়ী, যারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মতো যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা রাখেন কিন্তু রাজনীতির নানা কৌশলে যাদেরকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনা সম্ভব হয়না সাধারণত তারাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে ব্যাতিক্রম উদাহরণও আছে।

আগামী নির্বাচন, নানা আন্দোলন সংগ্রাম ও পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে তুলে ধরার তাগিদে এবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে মডেল ছাত্রলীগ দাবি করেছেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের কথা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ মেধাবী ছাত্র। কারো গায়ে দাগ আছে, বিতর্কিত এমন কেউ নেতৃত্বে আসার প্রশ্নই আসেনা। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন আরেকটু ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বলেন, যারা দুর্দিনে দলে কাজ করেছে, বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিল- তারাই প্রাধান্য পাবে।

যে যাই বলুক না কেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কথাই শেষ কথা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সাথে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে পারে এমন বেশ কয়েকজনের কথা জানা যায়। তারা হলে- বরিশাল অঞ্চলের কেন্দ্রীয় উপ-সম্পাদক শেখ ইনান, সহ সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, সহ সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার, ফজলুল হক হলের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিম, জসীম উদ্দীন হলের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ হোসেন।

ফরিদপুর অঞ্চলের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ সেবা সম্পাদক রানা হামিদ, ছাত্র বৃত্তি সম্পাদক শেখ সাগর আহমেদ, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, সহ সম্পাদক মোহাম্মদ রনি, ঢাবি শাখার সহ সভাপতি বিদ্যুৎ শাহরিয়ার কবির, এএফ রহমান হলের সভাপতি হাফিজুর রহমান এবং কবি জসীম উদ্দীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান।

ময়মনসিংহ অঞ্চলের ও জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, এসএম হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস।

চট্টগ্রাম থেকে উপ-গণশিক্ষা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম জুয়েল, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা উপ-সম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এইচএম তাজ উদ্দিন, ঢাবি শাখার সহ সভাপতি মো. জাবেদ হোসেন, এসএম হলের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল এবং এএফ রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার।

উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য এবং ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু।

তবে প্রথমবারের মতো আলোচনায় আছেন বেশ কয়েকজন নারী নেত্রীও। শীর্ষ পদের দৌঁড়ে আলোচনায় আছেন সাংস্কৃতিক উপ-সম্পাদক সাবরিনা ইতি, শামসুন্নাহার হলের সভাপতি নিপু তন্বী, সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, রোকেয়া হলের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার।

তবে কে হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্ব, কারা আসছেন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তা জানতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো বেশ কয়েকদিন।

টিকে