যথাযথ মর্যাদায় মে দিবস পালিত
প্রকাশিত : ১০:৪১ পিএম, ১ মে ২০১৮ মঙ্গলবার
‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই, সোনার বাংলা গড়তে চাই’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠসহ নানা কর্মসূচি।
মে দিবস উপলক্ষ্যে আজ ছিল সরকারি ছুটির দিন।
দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ পৃথক বাণী প্রদান করেন।
শ্রমিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের সকল গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার, সংবাদপত্রের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
দিনের শুরুতেই সকালে মহান রাজধানীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে। রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ের শ্রম ভবন এলাকা হতে র্যালিটি বের হয়। এই র্যালিতে নেতৃত্ব দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মহান মে দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক।
জাতীয় শ্রমিক লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে মহান মে দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
জাতীয় শ্রমিক পার্টি বিকেলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আসরাফুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ , কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় শ্রমিক জোট আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা দাবির প্রতি সমর্থন করে বলেন, ‘আমরা কারখানা রক্ষা করতে চাই, শ্রমিকদেরও হাসি মুখে রাখতে চাই। এবারের মে দিবসের অঙ্গীকার হোক নূন্যতম মজুরি নিশ্চিত করার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা হোক, সুস্থ শ্রমিক মালিক সম্পর্ক হোক, নিরাপত্তা হোক, মর্যাদা পাই, সম্মান হোক এবং শ্রমিকরা হাসি-খুশি থাক।’
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান মতিঝিলে আজ এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “দুর্ঘটনা রোধে শ্রমিক মালিক ও যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন হতে হবে। চালকের অবহেলা ও অদক্ষতায় যেন দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য চালকদের আরো বেশি সাবধানতার সাথে গাড়ি চালাতে হবে”।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত সংবাদপত্র সেবীদের জন্য ১৯৭৪ সালের আইন পুনর্বহালের জন্য আহবান জানান। ইউনিয়নের কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি আবু জাফর সুর্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ওমর ফারুক, সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইয়া, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাবেক সভাপতি শাবান মাহমুদ।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সকল গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ১০০ ভাগ মহার্ঘ ভাতা প্রদানের দাবি করে বলেন, দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্ব গতিতে গণমাধ্যম কর্মী জীবন যাত্রা চরম দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে।
মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল বের করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এইচ.এম, বেল্লাল। সমাবেশে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ১৫ দফা দাবিনামা উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা দিবা। সমাবেশে ন্যূনতম মুজরি ১৪ হাজার টাকা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত, শ্রমিক হয়রানি বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, পেশাগত স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি, ইপিজেডসহ সকল কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, শ্রমিকদের জন্য আবাসন সুবিধা, আট ঘন্টার মধ্যে এক ঘন্টা কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়।
এছাড়াও আরও বেশকিছু সংগঠন রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে মে দিবস উপলক্ষ্যে নানান কর্মসূচি পালন করেন।
//এস এইচ এস//টিকে