থাইল্যান্ডে ৩৬ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১০:৪৯ পিএম, ৩ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, তৈরি পোশাক ও ওষুধসহ ৩৬টি পণ্য রফতানিতে থাইল্যান্ডের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (৩ মে) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে থাইল্যান্ডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস বিষয়ক মন্ত্রী কোবসাক পুট্রাকুলের কাছে এ সুবিধা চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ১০০টি প্রকল্পে থাইল্যান্ডের প্রায় এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে থাইল্যান্ড বিনিয়োগ করলে একটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতাও দেওয়া হবে। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প নগরীতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করলে রফতানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের নগদ আর্থিক সহায়তার সুযোগও নিতে পারেন তারা।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবো। থাইল্যান্ডের সঙ্গে এফটিএ করার জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশকে ছয় হাজার ৯৯৮টি পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে থাইল্যান্ড। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৪৮ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি থাইল্যান্ডে করেছে। একই সময়ে আমদানি করেছে ৭৮১ দশমিক ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধসহ যেসব পণ্যের থাইল্যান্ডে প্রচুর চাহিদা রয়েছে, এমন আরও ৩৬টি পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে। সেদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভিসা সহজ করার আহ্বানও করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২০২১ সালে উভয় দেশের বাণিজ্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র থাইল্যান্ড। ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব। গতবছর বাংলাদেশে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ছিল। এবছর আরও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বমানের ওষুধ প্রস্তুত করছে। বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া গেলে থাইল্যান্ডে ওষুধ রফতানি বাড়বে।’
আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশের মোট রফতানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
থাইল্যান্ডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস বিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে থাইল্যান্ড আগ্রহী। বিনিয়োগের বিষয়ে বিডার সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যটন, ফাইনান্স, ম্যানুফ্যাকচারার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাণিজ্য করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্ব সেরা। আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ড আরও ঘনিষ্টভাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বেনোয়েট প্রিফনটেইন, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম, থাইল্যান্ডের ডেলিগেশন সদস্যরা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এসি