রোজ ১ ঘণ্টা বই পড়ার ৮ উপকার
প্রকাশিত : ১১:০৬ পিএম, ৩ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৫৬ এএম, ৫ মে ২০১৮ শনিবার
বই পড়লে জ্ঞান-বুদ্ধি বাড়বে সে বিষয় তো কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে শরীর সুস্থ রাখতেও এই অভ্যাস দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই তো নিয়মিত ১ ঘণ্টা করে বই পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। আসলে বই পড়ার সময় আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে একাধিক রোগ দূরে পালাতে বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতাও। বই এবং শরীরের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, যে কারণে বই পরলে তার সুফল শরীরের উপরও পরে। এই যেমন ধরুন-
স্ট্রেস কমতে শুরু করে
পরিসংখ্যান বলছে, আজকের যুগে যেসব রোগে নতুন প্রজন্ম বেশি মাত্রায় ভুগছে, তার বেশিরভাগের সঙ্গেই মানসিক চাপের সরাসরি যোগ রয়েছে। আর বই পড়ার অভ্যাস এমন ধরনের সমস্যাকে কমাতে দারুন কাজে আসে। একাধিক কেস স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়েছে, বই পড়ার সময় মন খুব শান্ত হয়ে যায়, যেমনটা প্রাণায়ম করার সময় হয়ে থাকে। ফলে মানসিক চাপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক প্রভৃতি মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তাই তো ঘুমতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পছন্দের যে কোনও বই পড়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন হাতে-নাতে সুফল পাবেন।
মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
কর্মক্ষেত্রে হোক কী পড়াশোনায়, যে কোনও ফিল্ডে উন্নতি করতে গেলে মনোযোগ সহকারে সেই কাজটি করা একান্ত প্রয়োজন। না হলে যতই শ্রম করা হোক না কেনও কাঙ্খিত ফল মিলতে অনেক সময় লেগে যায়। আর এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে বই। কারণ প্রতিদিন বই পড়লে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে উন্নতি ঘটে মনোযোগ ক্ষমতারও। প্রসঙ্গত, যারা অ্যাটেনশান ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রমে ভুগছেন তারা আজ থেকেই বই পড়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই পরিস্থিতি একেবারে বদলে যাবে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি যত বাড়বে, তত স্মৃতিশক্তির উপর কুপ্রভাব পরবে। আর যদি ঠিক সময়ে মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারেন, তাহলে কিন্তু বিপদ! সেক্ষেত্রে মনে রাখার ক্ষমতা এতটাই কমে যাবে যে দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হতে শুরু করবে। স্ট্রেস তো থাকবেই, তাহলে উপায়? খুব সহজ! প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট সময় বই পড়ুন। এমনটা করলেই দেখবেন স্ট্রেস কমবে, অন্যদিকে স্মৃতিশক্তি আরও মজবুত হবে। এবার বুঝতে পারছেন তো জ্ঞান প্রদান ছাড়াও বইয়ের কত গুণ রয়েছে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
বই পড়ার সময় ব্রেনের মধ্যে থাকা হাজারো নিউরন বেশি বেশি করে কাজ করতে শুরু করে দেয়। ফলে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আর এমনটা হলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি নানা ধরনের ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
মানসিক শান্তির সন্ধান মেলে
সারা দিন কাজের পর ৬০-৭০ শতাংশ মানুষই মন-মেজাজ ভাল করতে টিভি দেখে থাকেন। কিন্তু তাতে কি সত্যিই মন শান্ত হয়? গবেষণা তো উল্টো কথা বলছে। বিজ্ঞানের কথা যদি শোনেন, তাহলে মন এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করতে টেলিভেশনের পরিবর্তে বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান। দেখবেন বেশি উপকার পাবেন। তাছাড়া টিভি দেখলে শরীরের কোনও উপকার হয় না, যা বই পড়লে হয়।
বিশ্লেষণ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
কর্পোরেট অফিসে যারা চাকরি করেন, তারা ভালই জানেন অ্যানালিটিকাল পাওয়ার যাদের বেশি থাকে, তাদের কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাই তো বলি বন্ধু, চাকরিক্ষেত্রে চটজলদি যদি উন্নতির সিঁড়ি চড়তে চান, তাহলে আজ থেকেই বই পড়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।
ওজন কমে
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! বই পড়লে বাস্তবিকই শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়। কীভাবে এমনটা সম্ভব হয়, তাই ভাবছেন নিশ্চয়? আসলে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বই পড়ার সময় ব্রেনের মারাত্মক লেভেলে এক্সারসাইজ হয়। যার প্রভাবে মেটাবলিজ রেটও বাড়তে শুরু করে। আর যেমনটা অপনাদের সবারই জানা আছে, হজম ক্ষমতার যত উন্নতি ঘটে, তত মেদ ঝরার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন কমতে শুরু করে।
বুদ্ধির বিকাশ ঘটে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস করলে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশের ক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি পায় যে বুদ্ধির ধারও বাড়তে শুরু করে। এবার বুঝেছেন তো বন্ধু, বই পড়লে শুধু জ্ঞান বাড়ে না, বুদ্ধিরও বিকাশ ঘটতেও শুরু করে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
একে//টিকে