ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

কোন দিকে যাচ্ছে তারেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত?

আলী আদনান

প্রকাশিত : ০৮:৪৪ পিএম, ৮ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

তারেক রহমান। বিএনপি`র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। চেয়ারপার্সন খালোদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় কারাগারে গেলে গঠণতন্ত্র মোতাবেক তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তবে এবার তার সেই নেতৃত্ব পড়েছে চ্যালেঞ্জের মুখে। তিনি সেই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন কিনা বা আদৌ তিনি দেশে ফিরে রাজনীতি করতে পারবের কিনা এ সব নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। সেই সংশয় শুধু তারেক রহমানের নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নয়, বরং আগামী নির্বাচনে বিএনপি`র ভূমিকা কী হতে পারে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলে নানা প্রশ্ন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য সফরে গেলে সেখানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, তারেক রহমান ২০১৪ সালের ২ জুন তার পাসপোর্ট বিট্রিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। যা পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে ফেরত পাঠানো হয়।

এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে বেশ ঝড় উঠে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এর ফলে তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। যেহেতু তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন, সেহেতু তিনি বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলে নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার কতটুকু রাখেন সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে বিএনপি`র পক্ষ থেকে বলা হয় তারেক রহমান বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, নাগরিকত্ব থাকার জন্য পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক নয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান বলেন, দূতাবাসে পাসপোর্ট থাকলেও তা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়নি। তাছাড়া  মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো পাসপোর্ট পাঠানোর নিয়মও নেই। তবে কেউ যদি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তাহলে নতুন পাসপোর্টের জন্য পুরনো পাসপোর্ট সহ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে তারেক রহমান দণ্ডিত আসামী হওয়ায় পাসপোর্ট নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন বিড়ম্বনা। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান বলেন, তারেক রহমান হাতে লিখা পাসপোর্ট নিয়ে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করেন। যা মেয়াদ শেষ হলেও তিনি নবায়ন করেন নি। অন্যদিকে পাসপোর্ট এমআরপি করানোর সুযোগ থাকলেও তিনি সেই সুযোগ কাজে লাগাননি।

নানা ধরনের আইনী জটিলতায় তারেক রহমানের ভবিষ্যত নতুন করে সংকটে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিএনপি`র মহাসচিব্ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা রুহুল কবীর রিজভী তারেক রহমানকে যতোই ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত বলে দাবি করুন না কেন, আগামী নির্বাচনের আগে তিনি এসব সংকট আইনগতভাকে মোকাবেলা করতে পারবেন কিনা সেটা নিয়েই দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। তবে তিনি যদি সেসব সংকট মোকাবেলা করতে না পারেন তাহলে আবারো বেশ কিছুদিনের জন্য তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত পড়তে পারে অনিশ্চয়তার মুখে।

টিকে