‘তামাম’ হ্যাশট্যাগ বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্ক সরকার
প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ৯ মে ২০১৮ বুধবার
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের বিরোধীদের এক টুইটার প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। ‘#তামাম’ নামের ঐ টুইটার প্রচারণাকারী দল ‘কী বোর্ড হিরোস’ নামের একটি সামাজিক গোষ্ঠীকেও ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তুর্কি ‘তামাম’ শব্দের ইংরেজি অর্থ ‘এনাফ’ যার বাংলা করলে হয় ‘যথেষ্ট’। তুরস্কের জনগণ চাইলে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে এক ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির সংসদে তিনি বলেন, “তুর্কি জনগণ যেদিন বলবে ‘তামাম’ আমি সেদিন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবো”।
প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পর এই ‘#তামাম’ প্রচারণা চালু করে ‘কী বোর্ড হিরোস’ নামের একটি দল। টুইটারে শুরু হওয়া এই প্রচারণা খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরদোগান বিরোধীদের বড় অংশ এতে যুক্ত হতে থাকে। দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং হলিউড অভিনেতারা পর্যন্ত এই হ্যাশট্যাগ প্রচারণায় শরিক হন।
ইতোমধ্যে প্রায় দুই মিলিয়নের মতো বার হ্যাশট্যাগটিকে রি-টুইট করা হয়।
তবে এই প্রচারণাটিকে ‘অনলাইন বট’ হিসেবে উল্লেখ করে টুইটার থেকে থামিয়ে দিয়েছে তুরস্ক সরকার। ‘অনলাইন বট’ ইন্টারনেট ভিত্তিক এক ধরনের সফটওয়্যার যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা পাঠায়।
এই অনলাইন বটের পিছনে কুর্দিশ পিকেকে বিদ্রোহী যোদ্ধারা এবং ফেতুল্লাহ গুলেন আছে বলে অভিযোগ আংকারার। ফেতুল্লাহ গুলেনকে ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী করে দেশটির সরকার। ফেতুল্লাহ গুলেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
এরদোগানের দল একে পার্টির এক মুখপাত্র মাহির উনাল এক বিবৃতিতে বলেন, “মূলত এই অনলাইন বটগুলো ফেটো এবং পিকেকে পার্টি থেকে পাঠানো হচ্ছে। গ্রীসে বসেও যদি কেউ আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাহলেও সেটা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু তাদের ব্যাপারে কী যারা ঘরের মধ্যে বসে শত্রুতা করছে?”
“কী বোর্ড হিরোজ যারা মূলত জানেন না ব্যালটের গুরুত্ব কী, আগামী ২৪ জুন রাতে তাদের সাথে আমাদের দেখা হবে”; বলেন উনাল।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১৫ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট হয়ে এই দীর্ঘ সময় তিনি ক্ষমতায় থাকেন। দেশটিতে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকলেও বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পরতে হয় তাকে।
এরদোগানের আমলে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও বিদ্রোহীদের সাথে অকারণে যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়া এবং বিরোধী অনুসারীদের দমন পীড়নের অভিযোগ আছে এরদোগানের বিরুদ্ধে। আগামী ২৪ জুন অন্তর্বর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তুরস্কে। নিজ মেয়াদের প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় আগে এই নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান।
সূত্র: আল জাজিরা
//এস এইচ এস//টিকে