সারাদেশে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা ২২
প্রকাশিত : ০৯:২৫ পিএম, ৯ মে ২০১৮ বুধবার
সারাদেশে বজ্রপাতে ২২ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হবিগঞ্জে ছয়জন, রাজশাহীতে তিনজন, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী ও কুমিল্লায় দুইজন এবং গাইবান্ধা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ ও নরসিংদীতে একজন করে মারা গেছেন। বুধবার ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের মাকালকান্দি হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ছয় জন। আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নবীগঞ্জ উপজেলার বৈলাকপুর গ্রামের হরিচরণ পালের ছেলে নারায়ণ পাল ও আমড়াখাই গ্রামের হাবিব উল্লার ছেলে আবু তালিব, মাধবপুর উপজেলার পিয়াইম গ্রামের রামচরণ সরকারের ছেলে জহরলাল সরকার, লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের জাহেদ মিয়ার ছেলে চকি মিয়া, সুনামগঞ্জের ধাইপুর গ্রামের বসন্ত দাসের ছেলে স্বপন দাস ও সিরাজগঞ্জের নওসের মিয়ার ছেলে জয়নাল মিয়া।
এ ছাড়াও জেলার লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন চকি মিয়া। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণ করেন।
তাছাড়া একইদিন দুপুরে নবীগঞ্জের বৈলাকপুর হাওরে বজ্রপাতে নারায়ণ পাল ও আবু তালিব মারা যান। একই সময়ে মাধবপুরের পিয়াইম হাওরে নিহত হন জহরলাল সরকার।
জামালপুর
জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে মো. হাবিবুর রহমান (৫৬) নামে একজন কৃষক মারা গেছেন। আজ বুধবার সকালে উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের মৌলভীর চরে এ ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লা
কুমিল্লার মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই কিশোর মারা গেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের দক্ষিন পাড়া খেলার মাঠ সংলগ্ন বোরো ফসলি জমির মাঠে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- যাত্রাপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ফিরোজ মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া(১৮) একই পাড়ার হামিদ মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (১৪)।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের নিকলী ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়নের পরিষদপাড়া গ্রামের শাহ জালাল (২৪) ও পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আশুতিয়া গ্রামে দিপালী রানী বর্মণ (৩৫)।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় বজ্রপাতে আলাল উদ্দিন (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার চর নীলক্ষীয়ায় বজ্রপাতে মারা যান তিনি । এ ছাড়াও একই সময় জেলার মুক্তাগাছায় বজ্রপাতে আটজন আহত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন জেলার ধরমপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্বাকান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে জুয়েল আহমদ (১৬) ও শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে আলমগীর মিয়া (২২)।
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় বজ্রপাতে ইয়াকুব আলী (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নীলফামারী
নীলফামারীর জলঢাকায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রামের আসমা বেগম (৫০) ও কাঁঠালী ইউনিয়নের উত্তর দেশীবাই গ্রামের নূর আমিন (৪৫)। আজ
বুধবার সকালে জেলাজুড়ে ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টির সময় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
রাজশাহী
রাজশাহীর তানোরে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুইজন। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেরার পৃথক তিনটি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ বাতাসপুর গ্রামের জমির মাঠে ধান কাটতে গিয়ে বাতাসপুর গ্রামের ডোকমান আলীর পুত্র আনছার আলী (৩০) বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন বাসাতপুর গ্রামের অনিল শাহার পুত্র আনন্দ শাহা (৩৫) ও হিরেন শাহার পুত্র টিল শাহা (৩০)।
এদিকে একইদিনে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের দুবইল নামোপাড়া গ্রামের সামসুদ্দীনের পুত্র সোহাগ আলী (১৮) সকালে জমির মাঠে সেমি ডিপের কাজ করছিল। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
অপরদিকে কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, আজ সকালে কলমা ইউনিয়নের চকরতিরাম আদিবাসী গ্রামের বেলাম হেমরমের স্ত্রী এলেনা মুরমু (৩৫) জমিতে বোরো ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন তিনি।
গাইবান্ধা
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় বজ্রপাতে মহর আলী (৩৫) নামে এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের চর কাবিলপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের পশ্চিম ছালুয়া গ্রামের চরে এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী
নরসিংদীর মনোহরদীতে বজ্রপাতে পিয়ারা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের চরতারাকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া একই উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন ঘেঁষে একটি বজ্রপাত হয়। এ সময় বিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণ অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণির ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সাড়া দেশে বিভিন্ন সময়ে ঝড়ের সময় ২২জন প্রাণ হারায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কেআই/টিকে