ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বিকাল ৫ টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হলে কাল থেকে সারাদেশে ক্লাস বর্জন

প্রকাশিত : ০২:০৬ পিএম, ১৩ মে ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৫:১১ পিএম, ১৩ মে ২০১৮ রবিবার

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারে আজ রোববার বিকাল ৫টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে সারাদেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্নিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

আজ রোববার বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদেরর আহ্বায়ক হাসান আল মামুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আজ বিকাল ৫ টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হয় তাহলে আগামীকাল সোমবার থেকে সারাদেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রোববার বেলা ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি চারুকলা বিভাগ প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে ‘আর নয় সময়ক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘কত দিন হবে প্রজ্ঞাপন, আর নয় বিজ্ঞাপন’, ‘এবার চাই প্রজ্ঞাপন, আর নয় প্রহসন’ এসব স্লোগান দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আজ সারাদেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় একযোগে এ বিভোক্ষ মিছিল কর্মসূচি চলছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চাকরিপ্রার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও প্রজ্ঞাপন জারি হচ্ছে না। এটি আমাদের হতাশ  করছে। আমরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এর আগে কোটা সংস্কার ও প্রজ্ঞাপনের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলো শিক্ষার্থী।  তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা না পেয়ে ফের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করে শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল থেকে চারদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন। পর দিন সচিবালয়ে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের অত্যন্ত সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি- আগামী ৭ মের মধ্যে সরকার বিদ্যমান কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। সেই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।

এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনও ৭ মে পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল রাতে আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়। তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর এক বক্তব্য কেন্দ্র করে ১০ এপ্রিল থেকে ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত আসার দাবি জানান।

পরে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে সব চাকরিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পর দিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে।

/ এআর /