ঢাকা, বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ২ ১৪৩১

‘বাংলাদেশ জাতীয় প্রবীণ মঞ্চ’-এর উদ্বোধন

প্রকাশিত : ১০:৪২ পিএম, ১৪ মে ২০১৮ সোমবার

বাংলাদেশ সরকারের প্রবীণ নীতিমালা বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করার উদ্দেশ্যে দেশে প্রবীণদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয় প্রবীণ মঞ্চ’ গঠিত হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর উদ্যোগে গঠিত এই মঞ্চ প্রবীণদের জন্য প্রদেয় বিভিন্ন পরিষেবাকে আরো সমন্বিত ও ফলপ্রসুভাবে প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে টেকসইকরণের পাশাপাশি একটি প্রবীণবান্ধব সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সোমবার (১৪ মে) ঢাকার পিকেএসএফ মিলনায়তনে এই মঞ্চের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব ফয়েজ আহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এবং প্রবীণদের উন্নয়নে কৌশলগত উদ্যোগ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ আবদুল করিম।   

প্রবীণদের প্রজ্ঞা থেকে আজকের তরুণরা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা পেতে পারেন মন্তব্য করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, দেশের চলমান উন্নয়নের ধারায় অবশ্যই প্রবীণদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, নইলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠির কল্যাণে ‘প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ গঠনের লক্ষ্যে প্রণীত আইনের খসড়াটি মন্ত্রণালয়ে রয়েছে, যা দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আদলে প্রবীণ বিষয়ক একটি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন জনাব রাশেদ খান মেনন। তিনি জানান, পিকেএসএফ-এর প্রবীণ বিষয়ক কার্যক্রমের আদলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্মসূচি গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছরে পৌঁছেছে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব জনাব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সামাজিক কর্মকাণ্ডে প্রবীণদের সম্পৃক্ত করলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকেন এবং তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, নবগঠিত এই প্ল্যাটফর্মটি এই লক্ষ্যে নবতর কর্মসূচি গ্রহণ করার মাধ্যমে একটি প্রবীণবান্ধব সমাজ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ আবদুল করিম বলেন, জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ এবং পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন ২০১৩-এর আলোকে পিকেএসএফ-এর প্রবীণ বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে, এ বিষয়ক কার্যক্রম বেগবান করার লক্ষ্যে একটি পৃথক মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর গঠন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক এই মুখ্যসচিব। ‘বাংলাদেশ জাতীয় প্রবীণ মঞ্চ’ প্রবীণকল্যাণে একটি মডেল সংগঠন হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রবীণ জনগোষ্ঠীসহ সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা আবিশ্যিক বলে মন্তব্য করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। এসময় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় প্রবীণ মঞ্চের উপদেষ্টা কমিটি, কার্যনির্বাহী কমিটি ও সাধারণ পর্ষদ ঘোষণা করেন।

প্রস্তাবিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির সদস্যবৃন্দ হলেন অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান, কথাসাহিত্যিক জনাব সেলিনা হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. নাসরীন আহমাদ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং পিকেএসএফ পরিচালিত প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন জনাব ফজলুল কাদের, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কার্যক্রম), পিকেএসএফ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনাব রাবেয়া সুলতানা, কান্ট্রি ডিরেক্টর, হেল্প এইজ ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। এছাড়া প্রবীণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার আলোকে বক্তব্য রাখেন জনাব আবুল হাসিব খান, নির্বাহী পরিচালক, রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এবং জনাব মনোয়ারা বেগম, নির্বাহী পরিচালক, প্রত্যাশী। অনুষ্ঠানে পিকেএসএফ পরিচালিত প্রবীণ কর্মসূচিভুক্ত ১০০টি ইউনিয়নের প্রবীণ প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসি