খুলনা সিটির ভোটে কী পাবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি?
প্রকাশিত : ০৪:১৩ পিএম, ১৫ মে ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৩৩ পিএম, ১৫ মে ২০১৮ মঙ্গলবার
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় শহর খুলনায় মঙ্গলবার শুরু হয়েছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কাগজে-কলমে এটি একটি স্থানীয় নির্বাচন হলেও এ নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল এমনকি সাধারণ মানুষেরও তুমুল আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য আর নানামুখী তৎপরতায় স্থানীয় নির্বাচনের গণ্ডি পেরিয়ে এর একটা জাতীয় চেহারা এখন দৃশ্যমান।
খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোট নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এখন গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে আছি। জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখলের যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া চলছে, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। এখানে আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাই। সেজন্যই দলের চেয়ারপার্সন কারাগারে থাকা সত্ত্বেও আমরা খুলনার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।
বিএনপির কাছে এই নির্বাচন যখন তাদের ভাষায় গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ের অংশ আওয়ামী লীগ তখন একে দেখছে, উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ হিসেবে।
যদিও এই নির্বাচনের জয়-পরাজয় চূড়ান্তভাবে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি নয় বলেও মনে করেন দলটির অনেক নেতা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে চান তারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি আমরা কুমিল্লা ও রংপুর সিটি নির্বাচনে হেরেছিলাম। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আমরা জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছি। আমরা খুলনা সিটি নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরত্বই দিচ্ছি। এই নির্বাচনটা আমাদের কাছেও একটা আন্দোলন।
`গত ৯ বছরে দেশে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, আমরা তা ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। জাতীয় নির্বাচনেও যেন ভোটারদের ওপর এর একটা প্রভাব থাকে আমরা সে চেষ্টাই করছি।
দুই দলের নেতাদের কথায় বোঝা যাচ্ছে, স্থানীয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে মূলত: জাতীয় নির্বাচনের হিসেব-নিকেশেই করে নিচ্ছে প্রধান দুই দল।
এক্ষেত্রে একদল সামনে নিয়ে এসেছে উন্নয়নের স্লোগান, অন্যদল প্রচার করছে তাদের ভাষায় গণতন্ত্রের সংকটের কথা।
কিন্তু যেভাবে দুই বিপরীতমুখী বক্তব্য নিয়ে তারা প্রচারণায় এসেছে তার যৌক্তিকতা কতটা?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইন মনে করেন, জনগণ উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বিভাজন চায় না। দেখা যাচ্ছে, একটি দল উন্নয়নকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। অপর দল গণতন্ত্রকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু আসলে দেশের মানুষের জন্য উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের মধ্যে তো কোন বিরোধ নেই। দুটিই সমানভাবে জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
জনগণ গণতন্ত্রের মাধ্যমই উন্নয়নের পথে যেতে চান। যেহেতু এটা এখন একটা পাবলিক ডিসকোর্সের অংশ হয়ে গেছে, তাই ভোটাররা কোন স্লোগানকে গ্রহণ করে, কী সিদ্ধান্ত দেয় এই নির্বাচনে তার একটা প্রতিফলন দেখা যাবে।
এদিকে খুলনা সিটি নির্বাচনের পরই জুনের শেষে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি নির্বাচন। এরপর রাজশাহী, সিলেট, বরিশালসহ আরও কয়েকটি সিটি নির্বাচন হওয়ার কথা।
ড. নাসিম আখতার হোসাইন মনে করছেন, এসব নির্বাচন জনপ্রিয়তা প্রমাণে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটা বড় পরীক্ষা। তবে একইসঙ্গে এটি নির্বাচনের কমিশনের যোগ্যতারও বড় পরীক্ষা নেবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।
এসএইচ/