ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

যে কারণে এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১৬ মে ২০১৮ বুধবার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ আপিল বিভাগ সর্বসম্মত হয়ে বহাল রাখলেও এই মুহূর্তে মুক্তি পাচ্ছেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অন্তত ছয়টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় এখনই মুক্তি মিলছে না বিএনপির এ শীর্ষ নেতার।   
আজ বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখার আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
আদেশের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আপিলের আদেশের পরও খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে কিছুটা বিলম্ব হবে। কারণ, সরকার নানা কৌশলে তাঁর মুক্তি বিলম্বিত করার চেষ্টা করবে। নিম্ন আদালতে কতগুলো মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। সেই মামলাগুলোতে তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
‘আমাদের সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা চেষ্টা করব এগুলো দ্রুত করার। আপিল বিভাগ যেহেতু এ মামলায় জামিন বহাল রেখেছেন। তাই আমার বিশ্বাস, অন্যান্য মামলায়ও তিনি জামিন পেয়ে শিগগির আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন’-যোগ করেন সাবেক এ আইনমন্ত্রী।
খালেদার অপর আইনজীবী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনও প্রায় একই কথা বলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার মতো একটি বড় মামলায় যেহেতু খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রয়েছে, ফলে অন্যান্য মামলায়ও তিনি সহজেই জামিন নিয়ে মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মাহবুব হোসেন।
খালেদা জিয়ার অন্য মামলার বিষয়ে তাঁর আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, খালেদা জিয়াকে আরও ছয়টি মামলায় জামিন নিতে হবে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় তিনটি, ঢাকায় দুটি এবং নড়াইলে একটি মামলা রয়েছে। হত্যা, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক আইনে কুমিল্লায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। আর ঢাকার দুটি এবং নড়াইলের মামলা হচ্ছে মানহানির।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। এ মামলার অপর আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানাও করা হয়।
পরে ১২ মার্চ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
১৪ মার্চ খালেদা জিয়ার হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত করে লিভ টু আপিল দায়েরের জন্য দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশন।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকার, দুদক ও আসামিপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার জামিনের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল গ্রহণ করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
/ এআর /